২৮অক্টোবর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি হামিদুর রহমানের ৫১তম শাহাদাৎ বার্ষিকী। ১৯৭১ সালের এই দিনে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই সীমান্তে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন তিনি।
১৯৪৫ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগুনা জেলার চাপড়া থানার ডুমুরিয়া গ্রামে তার জন্ম হয়। তার পিতার নাম আক্কাস আলী এবং মাতার নাম কায়ছুননেছা। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তাদের পরিবার বৃহত্তর যশোরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার খর্দ্দ খালিশপুর গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন। ৭ ভাই-বোনের মধ্যে হামিদুর রহমান ছিলেন সবার বড়। ১৯৭১ সালে ২ ফেব্রুয়ারি হামিদুর রহমান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। তাকে প্রশিক্ষণে পাঠানো হয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ট্রেনিং সেন্টার চট্রগ্রামে। ২৫ মার্চ রাতে খান সেনারা বাঙালিদের উপর আক্রমণ শুরু করলে চট্রগ্রামেই প্রথম সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রথম খান সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। হামিদুর রহমান ওই যুদ্ধে অংশ নেয়। তাদের যুদ্ধকালীন এলাকা ছিল সিলেট জেলার শ্রীমঙ্গল এলাকায়। তিনি মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে দক্ষিণপূর্ব কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্তে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে শত্রু পক্ষের দুইজন সৈন্যকে ঘায়েল করেন। এরপর শত্রু পক্ষের গুলিতে ১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর সকালে তিনি শাহাদাতবরণ করেন। তখন তার সহযোদ্ধারা তার মরদেহ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ধলই জেলার সদর আমবাসার থেকে ৮৬ কিলোমিটার দূরে হাতিমারা ছড়া গ্রামে জানাযা দেওয়ার পর একটি মুসলিম পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করেন। ২০০৭ সালের ১০ ডিসেম্বর তার দেহবাশেষ ঢাকায় জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে নিয়ে আসা হয়। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পর ১১ই ডিসেম্বর মিরপুরস্থ শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পুনরায় সমাহিত করা হয়।
খালিশপুর সরকারি বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ হামিদুর রহমান কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, সকাল ৯টায় পতাকা উত্তোলন, শোকযাত্রা, প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, মিলাদ মাহাফিল ও আলোচনা সভার আয়াজন করা হবে। ওই সকল অনুষ্ঠানে স্থানীয় এমপি শফিকুল আজম খাঁন চঞ্চল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।