আজ - মঙ্গলবার, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ১১:৪০

যশোরে ১৩৫ কেন্দ্রে ১৩৭টি টিম করোনা টিকা প্রদান করবে

৯৬ হাজার নয়, যশোরে প্রথম ধাপে করোনা প্রতিরোধী ভ্যাকসিন পাবে ৪৮ হাজার মানুষ। ইতিমধ্যে জেলার সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ভ্যাকসিন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত স্বাস্থ্য বিভাগের ২৭৪ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। গোটা জেলা জুড়ে ১৩৫টি কেন্দ্রে মোট ১৩৭টি টিম এ টিকা প্রদান করবে। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি যশোরসহ সারাদেশে একযোগে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন প্রদান (টিকা) কর্মসূচি শুরু হবে।
সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীন জানান, যশোরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধী ভ্যাকসিন (টিকা) প্রদান কার্যক্রম শুরুর যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ৯৬ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন এসেছে। যার উৎপাদন ও মেয়াদের তারিখ যাচাই করে নেয়া হয়েছে। সিভিল সার্জন অফিসের ইপিআই স্টোরে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ভ্যাকসিনগুলো সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। টিকাগুলোর নিরাপত্তায় রয়েছেন পুলিশের ৪ সদস্য ও সিএস অফিসের একজন গার্ড। একইসাথে ইপিআই স্টোরের নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের সহযোগিতা নেয়া হয়েছে। এছাড়া সিভিল সার্জন অফিসের নিজস্ব জেনারেটর ব্যবস্থাও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সিভিল সার্জন জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে যশোরের ৮টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন পাঠানো শুরু হয়। ইতিমধ্যে ৮টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের ভ্যাকসিন পৌছে গেছে। তিনি বলেন, টিকা প্রয়োগের জন্য ৮২২ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এরমধ্যে ৫৪৮ স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন ও বাকি ২৭৪ জনকে ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। গত ৩০ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ প্রশিক্ষণ চলেছে।
এদিকে, সুষ্ঠুভাবে ভ্যাকসিন প্রদানের কাজে ১৩৭টি টিমে ১৯৮জন কর্মী নিয়োজিত থাকবেন। এরমধ্যে সদর উপজেলা ব্যতিত ৭টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২১টি টিম, যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮টি, পুলিশ হাসপাতালে ১টি, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ৪টি ও বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান অভ্যান্তরে ২টি টিম কাজ করবে। এছাড়া, জরুরি রিজার্ভ থাকছে ইউনিয়ন পর্যায়ে ৯১টি, যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮টি ও সিভিল সার্জন অফিসে২টি টিম। মহামারি মোকাবিলায় সম্মুখ যোদ্ধাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ ভ্যাকসিন দেয়া হবে। ভ্যাকসিন গ্রহণের পর যে কোনো ধরণের অনভিপ্রেত ঘটনা মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সমন্বয়ে একটি টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধী ভ্যাকসিন দেশব্যাপি বন্টন করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। যশোরের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৮ কার্টুন ভ্যাকসিন। প্রতিটি কার্টুনে রয়েছে এক হাজার দু’শ ভায়াল। এক ভায়াল থেকে ১০জনকে ভ্যাকসিন প্রদান করা যাবে। সে হিসেবে প্রথম দফায় যশোর জেলায় ৯৬ হাজার মানুষ করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন পাবেন। অবশ্য স্বাস্থ্য বিভাগের একটি সূত্র বলেছে, যশোরে প্রথম দফায় আসা ভ্যাকসিনের মধ্যে অর্ধেক ৪৮ হাজার মানুষের মাঝে প্রয়োগ করা হবে। যেহেতু এ ভ্যাকসিন ২৮ দিনের ব্যবধানে মানুষের শরীরে দু’বার প্রয়োগ করতে হয়। সেহেতু দ্বিতীয় দফা ভ্যাকসিন আসার অপেক্ষা না করে বাকি ৪৮ হাজার প্রথম দফায় দেয়া মানুষের মাঝে প্রয়োগ করা হবে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের এ জাতীয় নির্দেশনা এখনো যশোরে আসেনি বলে সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহিন জানিয়েছেন। এছাড়া, এক ভায়ালের ওষুধ ১০ জনকে প্রয়োগ করার ফলে কিছু সিসটেম লসের আশঙ্কা করছে যশোর স্বাস্থ্য বিভাগ।
সিএস আবু শাহীন জানান, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ব্যতিত কেউই ভ্যাকসিন নিতে পারবেন না। এটি কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। “সুরক্ষা” ওয়েবসাইট অথবা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্নকারীদের ভ্যাকসিন গ্রহণের তারিখ, সময় ও স্থান এসএমএস-এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। রেজিস্ট্রেশন করতে কারো সমস্যা হলে যশোর সিভিল সার্জন অফিসে হেলফ ডেস্ক খোলা হয়েছে। এখান থেকে সাধারণ মানুষ সহযোগিতা গ্রহণ করতে পারবেন।
বিষয়টি নিয়ে যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশনের বাইরে কেউ ভ্যাকসিন পাবেন না। তবে প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি যশোরে ৪৮ হাজার মানুষকে প্রথম দফায় টিকা দেয়া হবে। বাকি ৪৮ হাজার মানুষকে এ টিকা দ্বিতীয় দফায় দেয়া হবে। তিনি সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে সাংবাদিকদের দ্রুত রেজিস্ট্রেশন করার আহবান জানান।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত