আজ - বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - বিকাল ৫:৫৬

যশোর জেলা আ’লীগ আয়োজিত গণজমায়েতে একই মঞ্চে শাহীন-নাবিল, দু’জনের বক্তব্যে একই সুর।

বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে আয়োজিত গণজমায়েতের মঞ্চে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি ও যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ উপস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন দলের নেতাকর্মীরা। জমায়েতে বক্তৃতাকালে প্রত্যেক বক্তা এ বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আগামী ৩১ মার্চ আসন্ন যশোর পৌরসভা নির্বাচনে তাদের বিজয়ের বার্তা জানিয়েছেন যশোরবাসীকে।
তারা বলেন, যেকোনো ক্রান্তিলগ্নে আওয়ামী লীগ এক ও অভিন্ন। বক্তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত স্লোগানে কর্মীরা মুখরিত করে তোলেন সমাবেশস্থল। দুই জন শীর্ষনেতার বক্তব্যেও একই সুর বেজে ওঠে।   
১৭ মার্চ বিকেলে শহরের দড়াটানা ভৈরব শহিদ চত্বরে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে গণজমায়েতস্থলে ঢল নামে দলীয় নেতাকর্মীদের।   
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই গণজমায়েতে সভাপতিত্ব করেন দলের জেলা সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন।
বক্তৃতাকালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি বলেন, আজকের এই গণ জমায়েতে আওয়ামী পরিবারের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি প্রমাণ করে যেকোনও ক্রান্তিলগ্নে আওয়ামী লীগ এক ও অভিন্ন।
তিনি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখার অনুরোধ করে বলেন, ‘আপনি (শেখ হাসিনা) আমাদের যে দিক নির্দেশনা দেবেন, আমরা তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো।  আগামী ৩১ মার্চ যশোর পৌরসভার নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থীকে ভোট দিতে পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডের ৫৫ কেন্দ্রে দলের নেতাকর্মীরা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকবে। সেখানে বিএনপি-জামায়াতের কোনো ভোটার পাওয়া যাবে না। কেননা তারা এ দেশের মানুষের কাছে ভোট চাওয়ার অধিকারই রাখে না।  ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত তারা আওয়ামী লীগের ৩০ হাজার নেতাকর্মীকে খুন-গুম করেছে। যাদের তারা খুন করেছে, গুম করেছে- সেইসব পরিবারের কাছে আগে মাফ চেয়ে আসুক।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে সন্ত্রাসী-গডফাদার আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, উনি তো দেশেই আসতে পারেন না। বিদেশে থেকে আন্ডারওয়ার্ল্ডের গডফাদার দাউদ ইব্রাহিমদের সাথে সখ্য করে মাঝেমধ্যে ভিডিও বক্তব্য দেন।
তিনি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
গণজমায়েতে সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত এ দেশে বহু বাঙালি নেতাকর্মীর জন্ম হয়েছে। একমাত্র বঙ্গবন্ধুই কখনোই কোনো কিছুর সাথে আপস করেননি। কোনও কিছুর মোহ তাকে আচ্ছন্ন করতে পারেনি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তাই বঙ্গবন্ধুর এক আহ্বানে নিরস্ত্র মানুষ সশস্ত্র হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তির লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলার বুকে পত পত করে উড়েছে লাল-সবুজের পতাকা।
তিনি বলেন, যার জন্ম না হলে বাংলাদেশ নামে কোনো রাষ্ট্রই জন্ম নিতো না; তিনি হলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার ১০১তম জন্মবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।  
জমায়েতে তিনি আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের আদর্শ, আমরা শেখ হাসিনার কর্মী। নেতাকর্মীদের মধ্যকার বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমরা এক থাকলে কোনো অপশক্তিই আমাদের এই অগ্রযাত্রাকে রুখতে পারবে না।’ 
সভাপতির বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘১৯২০ সালের ১৭ মার্চ যদি বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হতো; তাহলে আমরা এই স্বাধীন ভূখণ্ড পেতাম না। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ শেষে দেশকে যখন নতুনভাবে বঙ্গবন্ধু গড়ার উদ্যোগ নেন, সেই মুহূর্তে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি তাকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে। কিন্তু তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদৃঢ় ও সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বের কারণে আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।’
তিনি বঙ্গবন্ধুর আরো কয়েকজন খুনি যারা বিভিন্ন দেশে লুকিয়ে রয়েছে, তাদের দেশে এনে ফাঁসির রায় কার্যকরের আহ্বান জানান।    
গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ, যুগ্ম সম্পাদক মীর জহুরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, পৌরমেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু, দলের সদর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহারুল ইসলাম, শহর কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপু, ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েল প্রমুখ।
মঞ্চে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার নৌকা মার্কার প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ, মুক্তিযোদ্ধা খয়রাত হোসেন, মোহিতকুমার নাথ, অ্যাডভোকেট আলী রায়হান, অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান প্রমুখ।
বক্তারা বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষের এই আয়োজনে একই মঞ্চে দলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের উপস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং মুহুর্মুহু স্লোগানে গোটা জমায়েতস্থল মুখরিত করে তোলেন।  
অনুষ্ঠান শুরুর আগে দড়াটানা ভৈরব শহিদ চত্বরের মঞ্চে বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মবার্ষিকীতে ১০১টি বেলুন ও ফেস্টুন উড়ানো হয়।

আরো সংবাদ