আজ - শুক্রবার, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ১২:৩৬

যশোর বেনাপোল রোডে ৫ম দিনে গড়ালো বাস ধর্মঘট।

টানা চারদিন ধরে যশোরের বেনাপোল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। বিশেষ করে ভারত ফেরা যাত্রীরা বেনাপোল এসে পড়ছেন চরম দুর্ভোগে। বাস না চলায় চরম ভোগান্তি ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে তাদের। যাদের কাছে টাকা আছে, তারা বিকল্প ব্যবস্থায় অতিরিক্ত খরচ করে বাড়ি ফিরছেন। আর যারা অর্থের সমস্যায় আছেন তাদের ভোগান্তিটা বেশি হচ্ছে।

প্রশাসনের সঙ্গে পরিবহন মালিক শ্রমিকদের বৈঠকে কোনো সুরাহা না হওয়ায় বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে ঢাকা, যশোর পরিবহন মালিক সমিতি। এদিকে সোমবার (২৫ নভেম্বর) থেকে সাতক্ষীরা-নাভারণ-ঢাকা রুটের বাস চলাচল বন্ধ রাখে মালিক-শ্রমিকরা।

বাস মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোলে যানজট নিরসনে পৌর বাস টার্মিনাল ব্যবহারে নির্দেশনা দেয় জেলা প্রশাসন। এ টার্মিনাল ব্যবহারে সহমত পোষণ করে দিনের বাসগুলো ছাড়ছিল সেখান থেকেই। তবে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও সুবিধার জন্য রাতের বাসগুলো চেকপোস্ট টার্মিনালে এসে যাত্রী নামিয়ে পৌর টার্মিনালে চলে যাচ্ছিল। এরই মধ্যে হঠাৎ ২২ নভেম্বর রাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাসের যাত্রীদের পৌর বাস টার্মিনালে নামিয়ে দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে বাস চলাচল বন্ধ রাখে মালিক সমিতি।

ভারত থেকে আসা দুই দেশের যাত্রীরা বলছেন, বাস যে বন্ধ তা তারা জানতেন না। ফলে বেনাপোলে এসে পড়েছেন ভোগান্তিতে। রোগীরা পড়ছেন দুর্ভোগে।

বেনাপোল পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি বাবলুর রহমান বাবু জানান, জটিলতা সমাধানে রোববার বিকেলে যশোর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন পরিবহন শ্রমিক নেতারা। কিন্তু বৈঠকে কোনো সমাধান হয়নি। ফলে টানা চারদিনের মতো তারা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে।

বেনাপোল চেকপোস্টের শ্যামলী এনআর বাস কাউন্টারের স্টাফ মনজিল হোসেন বলেন, যাত্রী ভোগান্তি ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ না থাকায় মালিকদের নির্দেশে চারদিন ধরে বেনাপোল রুটে কোনো বাস ছাড়েনি।

খুলনা বিভাগ ও যশোর জেলা বাস মালিক সভাপতির মুসলিম উদ্দিন পাপ্পু জানান, আমদানি-রপ্তানিবাহী ট্রাকের কারণে যানজটের সৃষ্টি হতো। কিন্তু এখন বেনাপোল চেকপোস্টে বন্দর ভেহিক্যাল টার্মিনাল চালু হওয়ায় কমে গেছে জট। দূরপাল্লার যাত্রীদের নিরাপত্তা ও দুর্ভোগের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের বিবেচনা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

রোববার দুপুরে যশোরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দুই পক্ষই তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকায় ফলপ্রসূ কোনও সমঝোতা হয়নি। প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, যানজট নিরসনে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে এটা করা হয়েছে।

এই পরিপ্রেক্ষিতে পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগের নিয়মে বাস চলাচলের সুযোগ দিতে হবে। তা না হলে তারা রাস্তায় বাস চালাবেন না।

এ বিষয়ে বেনাপোল পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান জানান, প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর কোনও সমঝোতা হয়নি। তারা তাদের সিদ্ধান্তে অনড়। যাত্রীদের নিরাপত্তাসহ হয়রানির হাত থেকে রক্ষার জন্য আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছি। আমাদের পরিবহন বাসগুলো তো কোনও যানজটের সৃষ্টি করে না বা রাস্তায় দাঁড়িয়ে অহেতুক যানজট সৃষ্টি করে না। তাহলে কেন আমাদের সঙ্গে এ ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ করছে প্রশাসন?

শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ড. নাজীব হাসান বলেন, তারা (পরিবহন মালিক-শ্রমিক) কেন ধর্মঘট ডেকেছে, আমরা ওয়াকিবহাল নই। তাদের কোনো কিছু বলার থাকলে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করতে পারে। নৌ-পরিবহন উপদেষ্টার নির্দেশে এটা করা হয়েছে। তার নির্দেশনা ছাড়া আমাদের পক্ষে কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। পৌর টার্মিনাল থেকেই যাত্রী ওঠাতে হবে এবং নামাতে হবে।

আরো সংবাদ