আজ - সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ১:১১

লাল কার্ড ও পেনাল্টিতে স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের

ম্যাচের আগে ইতিহাস গড়ার কথা বলেছিলেন জামাল ভূঁইয়া। কিন্তু মালে জাতীয় স্টেডিয়ামে নতুন ইতিহাস রচনা হয়নি। বরং স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় আরেকবার নীল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। স্ট্রাইকার সুমন রেজার গোলে বাংলাদেশ ফাইনালের স্বপ্নে বিভোর হলেও শেষ দিকে এসে গোলকিপার জিকোর লাল কার্ড এবং পেনাল্টিতেই সর্বনাশ! ১০ জনের বাংলাদেশের বিপক্ষে পেনাল্টি পেয়ে সমতায় ফেরে নেপাল। ফলে ১-১ গোলে ড্রতে প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জায়গা করে নেয় হিমালয়ের দেশ, আর হতাশায় পোড়ে বাংলাদেশ।

আজ (বুধবার) মালে স্টেডিয়ামের ম্যাচে নেপালের প্রয়োজন ছিল ১ পয়েন্ট। বিপরীতে বাংলাদেশের জয়। কিন্তু শেষের দিকে এসে জয়টা হাতছাড়া হয়ে গেলো। চার ম্যাচে দুই জয় এবং একটি করে ড্র ও হারে ৭ পয়েন্ট নিয়ে হিমালয়ের দেশটি ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। সমান ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে স্বপ্নভঙ্গ হলো বাংলাদেশের।

অনেক দিন পর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ফাইনালে ওঠার হাতছানি ছিল বাংলাদেশের সামনে। নেপালের বিপক্ষে প্রথমার্ধে গোল করে সেই পথেই থাকে অস্কার ব্রুজনের দল। একাদশে চার পরিবর্তন এনে মাঠে নামে বাংলাদেশ। ফাইনালের লক্ষ্যে লাল-সবুজ দলের ছকেও আসে পরিবর্তন। আগের তিন ম্যাচ বাংলাদেশ ৪-১-৪-১ ছকে খেললেও আজ খেলেছে ৪-৪-২ ছকে।

মালে জাতীয় স্টেডিয়ামে পাল্টাপাল্টি আক্রমণ-নির্ভর খেলা হয়েছে। তৃতীয় মিনিটে নেপাল ফ্রি কিক পায়। সুজন শ্রেষ্ঠার শট অনেক দূর দিয়ে যায়।

অষ্টম মিনিটে বাংলাদেশ এগিয়ে যায়। জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি কিকে সুমন রেজা লাফিয়ে উঠে হেডে গোল করেন। ১৩ মিনিটে সাদ উদ্দিনের জোরালো শট পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।

১৫ মিনিটে নেপাল সুযোগ পায়। তবে সতীর্থের কাটব্যাক থেকে রোহিত চাদের শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। ১৯তম মিনিটে বাংলাদেশ আক্রমণে যায়। রাকিব হোসেন বক্সের প্রান্ত থেকে শট নিলে তা দূরের পোস্ট দিয়ে যায়।

২২ মিনিটে সুমন ভালো সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে ইব্রাহিমকে বল না দিয়ে নিজেই মারলেন। কিন্তু গোলকিপার কিরণ কুমার সহজেই করেন তালুবন্দি।

বিরতির পর বাংলাদেশ রক্ষণ সামলাতে ব্যস্ত থেকেছে। পাশাপাশি আক্রমণেও গেছে। গোলকিপার জিকো নেপালের একাধিক গোলের সুযোগ প্রতিহত করেছেন। তবে বড় ভুলও করে বসেন এই গোলকিপার, যে কারণে লাল কার্ড দেখতে হয় তাকে।

৫০ মিনিটে নেপালের আয়ুস গালানের ফ্রি কিক গোলকিপার জিকো পাঞ্চ করে ফেরান। তিন মিনিট পর অনন্ত তামাংয়ের হেড আবারও জিকো ডান হাত দিয়ে কোনোমতে ফিরিয়ে দেন।

৫৫ মিনিটে সুমন রেজা একক প্রচেষ্টায় নেপালের বক্সে ঢুকে পড়ে শট নিলেও গোল আসেনি। নেপাল গোলকিপার হাঁটু দিয়ে রুখে দেন।

৬৩ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে ইব্রাহিমের হেড ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। মিনিট দুয়েক পর ক্রস থেকে নোওয়াগ শ্রেষ্ঠার হেড গোলকিপার জিকো ডান হাত দিয়ে প্রতিহত করেন।

৭৯ মিনিটে বাংলাদেশ ১০ জনের দলে পরিণত হয়। বক্স থেকে বেরিয়ে এসে প্রতিপক্ষের একজনকে বাধা দেন গোলকিপার জিকো। কিন্তু বল গিয়ে লাগে তার হাতে। রেফারি লাল কার্ড দেখাতে সময় নেননি। এমনিতেই একজন কম, এর ওপর আবার ৮৭ মিনিটে পেনাল্টি পায় নেপাল। বক্সের ওপর ভেসে আসা বলে নেপালি ফরোয়ার্ডকে পুশ করেছিলেন সাদ উদ্দিন। কিন্তু সেটি ফাউল ছিল কিনা, সেটা নিয়েই বিতর্ক। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা আপত্তি জানালেও রেফারি তার সিদ্ধান্তে ছিলেন অটল। স্পট কিক থেকে অঞ্জন বিষ্টা লক্ষ্যভেদ করে বাংলাদেশের হৃদয় ভেঙে নেপালকে নিয়ে যান ফাইনালে।

আরো সংবাদ