আজ - শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - সন্ধ্যা ৬:১৮

সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার -চিরকুট লিখে স্ত্রীর আত্মহত্যা

বাঘারপাড়া প্রতিনিধি: যশোরের বাঘারপাড়ায় পেটের সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করায় অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূ নোট লিখে আত্মহত্যা । নিহত সাদিয়া খাতুন (২০) উপজেলার ধলগ্রাম ইউনিয়নের আন্দোলবাড়িয়া গ্রামের সেলিম রেজার স্ত্রী।

 

শুক্রবার (২৭ মে) সকালে একই উপজেলার বন্দবিলা ইউনিয়নের তেলীধান্যপুড়া গ্রামে পিতার বাড়িতে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেন সাদিয়া।

নিহত সাদিয়া খাতুনের মা তাহেরা বেগম বলেন, ‘বছর খানেক আগে আন্দোলবাড়িয়া গ্রামের মঞ্জুর মোল্যার একমাত্র সন্তান সেলিমের সাথে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। পারিবারিকভাবে বিয়ে হলেও এর আগে নিজের মামাতো বোনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো সেলিমের। কিন্তু বিয়ের পরও ওই মেয়ের সাথে তার পরকিয়া সম্পর্ক চলছিল। যেটা মেনে নিতে পারেনি আমার মেয়ে। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রায়ই সেলিম আমার মেয়েকে মারধর করতো। বিষয়টি সাদিয়া আমাদের না জানিয়ে মনের কষ্টে ঈদের ক’দিন আগে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।

সাদিয়ার বড়বোন খাদিজা খাতুন বলেন, ‘আমাদের দু’বোনের একই গ্রামে বিয়ে হয়েছে। সেলিমকে অনেক ভালোবাসতো সাদিয়া। তাই শ^শুর বাড়ির অশান্তির ব্যাপারে কিছুই বলতো না আমাকে। গত ১৫ দিন আগে সাদিয়াকে আমার মায়ের কাছে রেখে যায় সেলিম। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২৬ মে) বিকেলে সাদিয়া অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খুশির খবরটি ফোনে জানালে পিতৃত্ব পরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জানায় সেলিম। যে কারণে কষ্ট ও ক্ষোভে শুক্রবার ভোর রাতে শোবার ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে আমার বোনটা।’

এদিকে মুঠোফোনে সেলিম হোসেন বলেন, ‘আমার মামাতো বোনের ২০০৮ সালে বিয়ে হয়ে গেছে। তার সাথে অন্য কোন সম্পর্ক ছিলো না। আর আমার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়নি। তাই পিতৃত্ব পরিচয় দিতে আমার অস্বীকৃতি জানানোর কোন প্রশ্নই আসেনা।’

শেষবারের মতো নিজের অনুভূতির কথাগুলো সুইসাইড নোটে লিখে ছিলেন সাদিয়া খাতুন –
‘আমি ফোন দিছিলাম তোমার সাথে থাকবো বলে। তা তুমি বুঝলে না। আমি তোমাকে বলতে চাইছিলাম যে তোমার সন্তান আমার গর্ভে। তুমি বুঝলে না। তুমি ভালো থেকো। হয়তো বেঁচে থাকলে আমাকে মেনে নিতে না। কি করে তোমাকে ছাড়া অন্য কারো কাছে থাকবো। ভালো থেকো সেলিম।’

এব্যাপারে জানতে চাইলে বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ উদ্দীন জানান, খবর পেয়ে সকালে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার এখনও কোন মামলা করেনি।

আরো সংবাদ