উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে যে লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস দেয়া হচ্ছে, সেটি যদি ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এ রূপান্তর হয়, তবে তা এক পর্যায়ে শক্তিশালী ‘সুপার সাইক্লোনে’ পরিণত হতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পুরো উপকূলকে সতর্ক করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
শনিবার (২২ মে) সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।
আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, ‘ইয়াস’ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে তা আগামী ২৬ মে নাগাদ বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এই অবস্থায় প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গতকালই আমরা পরিপূর্ণ সংবাদ পেয়েছি। এটা এখন লঘুচাপ অবস্থায় আছে। এটা আগামীকালের মধ্যে সুস্পষ্ট লঘুচাপ হবে, এরপর ২৩ থেকে ২৪ মের মধ্যে নিম্নচাপ হবে। নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় হবে। ২৬ মে ভূমিতে আঘাত করার আশঙ্কা আছে। ভূমিতে আছড়ে পড়ার সময় এর গতিবেগ হবে ১২০ থেকে ১৯০ কিলোমিটার। এটা বর্তমানে বঙ্গোপসাগরের আন্দামান নিকোবর দীপপুঞ্জের কাছাকাছি আছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এর ডিরেকশন ভারতের উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গের দিকে। এটি যে অবস্থায় আছে, সেখান থেকে যদি সোজাসুজি আসে তবে আমাদের খুলনা বিভাগ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে।’
‘এটা জানার পর আমরা আবহাওয়া অধিদফতরের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা করেছি। আজকে বিকেল ৪টায় আমরা প্রস্তুতি সভা দিয়েছি। বিকেলে প্রস্তুতি সভার পর আমরা মাঠ প্রশাসনে আমাদের নির্দেশনা পাঠিয়ে দেব। ইতোমধ্যে সিপিপি ভলান্টিয়ারদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রচার কাজ শুরু হচ্ছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু এটি এখন পর্যন্ত লঘুচাপ হয়ে আছে, এখনই আতঙ্ক কিংবা শঙ্কার কিছু নেই। অন্যান্যবারের মতো এটা ‘সুপার সাইক্লোন’ হয়ে আঘাত হানতে পারে। আরেকটা বিষয় হলো ঘূর্ণিঝড় এগোনোর সময় প্রতিমুহূর্তে দিক পরিবর্তন করে। দিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন এলাকা আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা বাড়ে। সেজন্য আমরা আমাদের পুরো উপকূলকে সতর্ক করব, প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নেব।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি এখনো সৃষ্টিই হয়নি, তাই কোনো কিছু স্পষ্ট করে বলা যাবে না। আমাদের পূর্ব প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা ওয়েল প্রিপেয়ার্ড।’