আজ - সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ৪:৫০

হরতালের নামে ধ্বংসাত্মক কিছু করা চলবে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, হরতাল- ধর্মঘট রাজনৈতিক চর্চা। রাজনৈতিক দলগুলো এসব কর্মসূচি দিতেই পারে। কিন্তু আমাদের কথা হল, হরতালের নামে কেউ যদি রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, কেউ যদি ভাংচুর করে, কেউ যদি ধ্বংসাত্মক কিছু কওে, তাহলে অবশ্যই নিরাপত্তা বাহিনী ভূমিকা রাখবে। চট্টগ্রামের দামপাড়ায় আজ ‘পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, চট্টগ্রাম’ উদ্বোধনের পর, বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা ২৮ মার্চের হরতাল প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি, রাজনৈতিক দলগুলো সহনশীলতার পরিচয় দেবে। তারা কোনো ভাঙচুরে যাবে না, ধ্বংসাত্মক কাজ করবে না, জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি করবে না, কোনো বাধার সৃষ্টি করবে না। করলে যেটা হয় সেটাই হবে।’ বর্তমানে নিত্যপণ্য মূল্য নি¤œমুখী উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘একটা বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে, সারাবিশ্বে কিন্তু তেলের দাম বেড়েছে, শুধু বাংলাদেশে বাড়েনি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ-তিনগুণ হয়ে গেছে, পণ্যবাহী পরিবহনের ভাড়া অনেকগুণ বেড়ে গেছে। আমাদের দেশ তেল আমদানি করে, আমাদের দেশে অনেক কিছুই আমদানিনির্ভর। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম অনেক বেড়েছে, তার প্রভাব আমাদের দেশের বাজারেও পড়েছে, এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।’
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘নিত্যপণ্য মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ নিয়েছেন। বাজার সহনীয় রাখতে বেশ কিছু আমদানি পণ্যের ভ্যাট এবং ট্যাক্স কমিয়ে দিচ্ছেন। সাথে সাথে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এখন তেলের দাম, পিঁয়াজের দাম সবকিছুই নি¤œমুখী। দেশের মানুষ লক্ষ্য করছেন, আমাদের প্রচেষ্টার কোনো অভাব নেই। সাধারণ্যের কাছে নিত্যপণ্য যেন সহজলভ্য হয়, টিসিবির মাধ্যমে এলাকায় এলাকায় পণ্য পৌঁছে দিচ্ছেন। তারপরও যদি কেউ হরতাল ডাকে, আমাদের কিছু বলার নেই।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তবে আমাদের আবেদন থাকবে, হরতালের নামে তারা যেন কোনো ধ্বংসাত্মক কর্মকা- না করে। স্বাভাবিক জনজীবনে বাধার সৃষ্টি যেন না করে, জানমাল ধ্বংসের চেষ্টা না করে। সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অযৌক্তিক রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে কেউ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির অপচেষ্টা করলে, তারা জনগণ দ্বারা ধিকৃত হবে এবং জনগণের কাছ থেকে আরো দূরে সরে যাবে।’ আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘নির্বাচন এলে অনেকেই অনেক কৌশল অবলম্বন করে। জনগণের ভোট ছাড়া অন্যভাবে ক্ষমতায় আসা যায় কি না, এ ধরনের কৌশল অনেকেই করে। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী জনগণের ভরসায় চলেন, জনগণের শক্তিকে নিজের শক্তি মনে করেন। কাজেই জনগণের শক্তিতেই তিনি রাজনীতি করেন। জনগণের আস্থায় রাজনীতি করেন।’
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, চট্টগ্রামের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার সালেহ্ মোহাম্মদ তানভীর। অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) মো. শামসুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) সানা শামিনুর রহমান, উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) মো. আমির জাফরসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে বিপ্লবীরা ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রামে যে অস্ত্রাগার দখলে নিয়ে ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, সেই অস্ত্রাগার সংরক্ষণ করে দামপাড়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সে গড়ে তোলা হয়েছে ‘পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, চট্টগ্রাম’। ৮২ জন পুলিশ সদস্যের শাহাদাৎবরণ ও অন্যান্য ঐতিহাসিক ঘটনাবলীকে দৃষ্টিলব্ধ অবয়ব প্রদানের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উদ্যোগে এ জাদুঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

আরো সংবাদ