কাঙ্খিত সময় এসেছে আজ। অবশেষে মেয়েটি তাকে ডেকেছে। প্রথম দেখা হবে আজ কিন্তু মনে হচ্ছে কত চেনা। দীর্ঘদিনের জানাশোনা। অবশ্য দেখা না হলেও সম্পর্কটা সেই পর্যায়ে চলে গেছে। ভার্চুয়াল মাধ্যমে সরাসরি ছুঁয়ে দেখা ছাড়া কী হয়নি! তবে সম্পর্কটা ভিন্নরকম। যেনো একে-অন্যের আকাঙ্খা পূরণের সম্পর্ক। আবেগ আছে কিন্তু বিয়ে বা যৌথ জীবন-যাপনের কোনো স্বপ্ন নেই, কথা নেই।আজ মেয়েটির এক বান্ধবীর বাসায় দেখা হবে। দু’জনের মধ্যে কথা হচ্ছে অনেকদিন থেকে। অডিও, ভিডিও কলেও কথা হয়েছে। তবে কথার চেয়ে মেসেঞ্জারে চ্যাট হতো বেশি। কথায়, চ্যাটে ছিলো শারীরিক বিষয়।
মেয়েটির বয়স কম। স্থানীয় একটি কলেজের ছাত্রী বলেই জানেন আমান উল্লাহ। পয়ত্রিশ বছর বয়সী আমান উল্লাহ দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিলেন। প্রবাসের নিঃসঙ্গ জীবনে প্রভা অবসরের সঙ্গী। সেখানে থাকাকালেই প্রভা নামের এই মেয়েটির সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়। যখন-তখন অডিও কলে কথা হতো। এরমধ্যেই প্রভা তার সমস্যার কথা জানান। প্রয়োজন টাকা। আমান টাকা পাঠাতে চান। তবে তার আগে ভিডিও কলে ডাকেন প্রভাকে। প্রভাও সাড়া দেন। দীর্ঘসময় ভিডিও কলে কথা হতো। নিজেকে একেকদিন একেকভাবে উপস্থাপন করতেন প্রভা। উষ্ণতা ছড়িয়ে দিতেন দূরে থেকেই। দীর্ঘ প্রায় এক বছর পরিচয়ের পর সাভারে দেখা হবে তাদের। তুরাগ নদীর তীরে নির্জন এক বাড়িতে। আমান উল্লসিত। গাড়ি থেকে নেমে ফোনে প্রভার নির্দেশনা অনুসারে হাঁটতে থাকেন। নির্জন পথ দিয়ে, সরু গলি হয়ে একটি বাগান বাড়ি। তার সঙ্গে ছোট্ট একটি ঘর। সেখানে ঢুকতে বলেন প্রভা। আমান ধীর গতিতে এগিয়ে যান। এটা এক অন্যরকম মূহূর্ত। ভয় নেই। তবুও পা চলে না। বুকটা শুকিয়ে যায়। একটু আধটু কাঁপুনি ওঠে। ঘরের দরজা খোলা। ভেতরে ঢুকতেই হাতের ওপর একটি হাতের ছুঁয়া। আমানকে টেনে নিয়ে যান ভেতরের রুমে।
১৮ বছর বয়সী প্রভাকে দারুণ মায়াবি দেখাচ্ছে। ফর্সা সুন্দর চেহারা। তবে তার হাসিটা কেমন যেনো কৃত্রিম মনে হচ্ছে। পাশাপাশি বসে কথা হচ্ছে। হাতে হাত রেখে। এরইমধ্যে আরও কাছে চান আমান। ধৈর্য্য ধরতে বলেন প্রভা। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ। প্রভার মোবাইল ফোনে একটা ক্ষুদেবার্তা। এক নজর দেখেই ফোনটা দুরে রাখেন। এবার আমানকে বলতে হয় না। স্বেচ্ছায় নিজের জামা খুলে প্রায় নগ্ন হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে প্রভা জানতে চান, কেমন দেখাচ্ছে তাকে? অবাক বিস্ময়ে দেখছিলো আমান। এবার আমানও প্রায় bMœ| Ggb mgq nVvr দ্রুত চার যুবক ঘরে ঢুকে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ক্যামেরা দিয়ে ছবি ধারণ করে। তারপর আমানকে মারধর করে আরও কাছাকাছি বসিয়ে প্রভা ও আমানের ছবি ধারণ করে। আমানের সঙ্গে থাকা ১১ হাজার টাকা, দামি ঘড়ি লুটে নেয়। দাবি করে আরও টাকা। আমান জানান, আর টাকা দিতে পারবেন না। হুমকি দেয়া হয় বিচার সালিশ বসানো হবে। পরে ছবিগুলো আমানের বাড়িতে, আত্মীয়-স্বজনদের কাছে পাঠানো হবে। বাধ্য হয়ে বিকাশের মাধ্যমে কয়েক দফায় ১ লাখ টাকা দেন আমান। তারপর অনুনয়-বিনয় করে ছাড়া পান। সামাজিক কারণে এ নিয়ে থানা পুলিশমুখো হননি আমান। তবে পরে আর প্রভার ফোন খোলা পাননি তিনি। তাকে পাননি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, ওই চার যুবকের একজন লিটু। প্রভার স্বামী। প্রভা তার প্রকৃত নাম না। প্রতারণার জন্য এই নাম ব্যবহার করেন। বিয়ের পর লেখাপড়া ছেড়ে স্বামীর সঙ্গে প্রতারক চক্রের সদস্য হয়ে যান প্রভা। দীর্ঘদিন পর অন্য একটি মামলায় এই চক্রের একজনকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।