শার্শা ( যশোর) প্রতিনিধি : ভালো কাজের লোভ দেখিয়ে ভারতে পাচার হওয়া ২০ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী দুই থেকে তিন বছর পর দেশে ফিরল। এদের মধ্যে ৯ জন কিশোর ও ১১ জন কিশোরী রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারতের কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশি ডেপুটি হাই কমিশনার (রাজনৈতিক) শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) বিকাল ৪টার দিকে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তাদের হস্তান্তর করেন। এসব কিশোর-কিশোরীদের বাড়ি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায়। এদের বয়স ১২ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। ২ থেকে ৩ বছর আগে তারা দেশের বিভিন্ন সীমান্ত পথে ভারতে পাচার হয়।পাচার প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করা এনজিও সংস্থা যশোরের জাস্টিস এন্ড কেয়ার তাদের গ্রহন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে বলে জানা গেছে।
নড়াইল জেলার ইকবাল ফকিরের ছেলে হাসিব ফাকির (১৭), মাসুদ মোল্যার ছেলে সবুজ মোল্যা (১০) ও সুমন মোল্যা (১৪), নারানগঞ্জ জেলার সেলিম মিয়ার ছেলে সুইটি ইসলাম (১৭), শরিফুল ইসলাম এর মেয়ে সুমি খাতুন (১৪), সুইট খাতুন (১৪), অপর্না (১৬), রাফেজা খাতুন (২০), রাবেয়া খাতুন (২১), বাগেরহাট জেলার জাবেদ আলী (১৫), হাসান মাহমুদ (১৩), খুলনা জেলার সাজিদ হোসেন (১৪), লক্ষীপুর জেলার আদনান (১৫), নোয়াখালী জেলার বাপ্পি হাসান (১৩), যশোর জেলার নুর খাতুন (১৪), মুক্তা মোল্যা (১৩), ইষিতা (১৩), শেরপুর জেলার মৌসুমি খাতুন (১৭). সুমাইয়া খাতুন (২১), সাতক্ষীরা জেলার ফাতেমা খাতুন (২১) ও বরিশাল জেলার মেঘলা রায় (২১) ।জাস্টিস এন্ড কেয়ারের যশোর শাখার সিনিয়ার প্রোগ্রামার অফিসার মুহিত হোসেন জানান, সংসারে অভাব অনটনের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন সময় ভাল কাজের কথা বলে দালালরা এদের ভারতে পাচার করে। পরে ভাল কাজ না দিয়ে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে তাদের ব্যবহার করে। পরে ভারতীয় পুলিশ খবর পেয়ে তাদের পাচারকারীদের খপ্পর থেকে উদ্ধার করে আদালতে পাঠায়। সেখান থেকে তাদের আশ্রয় হয় ভারতীয় এনজিও সংস্থার শেল্টার হোমে। পরে কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের দেশে ফেরার বিষয়ে তৎপরতা শুরু করে। উদ্ধারকৃতরা বাংলাদেশি কিনা তা যাচাই করে কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভারত সরকারের ট্রাভেল পারমিটে আজ বৃহস্পতিবার দেশে ফিরে আসে। দেশে ফেরার পর এদেরকে আইনী সহায়তা দিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি রাজু আহম্মেদ বলেন, সেখানে অবৈধভাবে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে কাজ করার সময় পুলিশ তাদের আটক করে এবং আদালতে পাঠায়। সেখান থেকে ‘পশ্চিম বাংলার ৭টি এনজিও সংস্থা তাদের ছাড়িয়ে নিজেদের হেফাজতে নেয় এবং বিভিন্ন শেল্টার হোমে রাখে। পরে তাদের সার্বিক সহযোগিতায় দুই তিন বছর পর তাদের দেশে ফেরত পাঠিয়েছে ভারতীয় পুলিশ।