আজ - সোমবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ৪:০৮

অতিরিক্ত সময়ে জোড়া গোল, অস্ট্রিয়ার স্বপ্ন ভেঙে শেষ আটে ইতালি

প্রথমবার ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের নকআউটে উঠে কি দুর্দান্ত লড়াইটাই না করলো অস্ট্রিয়া! ইতালির মত প্রায় অপরাজেয় হয়ে পড়া দলকে রীতিমত নাড়িয়ে দিয়েছিল তারা।

ওয়েম্বলিতে দারুণ উপভোগ্য এক ম্যাচে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে জিততে পারেনি কেউ। খেলা গড়াল অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। আর অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে এসে জোড়া গোলে ব্যবধান গড়ল ইতালি। দ্বিতীয়ার্ধে অস্ট্রিয়া এক গোল ফেরালেও শেষ রক্ষা হয়নি।

শনিবার রাতে উত্তেজনাকর ম্যাচটি ২-১ ব্যবধানে জিতে আজ্জুরিরা নাম লিখিয়েছে ইউরো কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল বা শেষ আটে। সেই সঙ্গে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে নিজেদের ইতিহাসে টানা ৩১ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়েছে রবার্তো মানচিনির দল।

প্রথমার্ধে বল দখলে দুই দল প্রায় সমানে সমান থাকলেও আক্রমণে পরিষ্কার ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ইতালি। কিন্তু একের পর এক সুযোগ তৈরি করেও গোলের দেখা পায়নি আজ্জুরিরা।

১৭ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো ইতালি। লিওনার্দো স্পিনাজ্জোলার পাস থেকে বক্সের মধ্যে বল পেয়ে শট নিয়েছিলেন নিকোলা বারেল্লা। অস্ট্রিয়ার গোলরক্ষক বাখম্যান শেষ মুহূর্তে একটা পা ধরে দিয়ে গোল বাঁচান।

পরের মিনিটেই প্রথমার্ধে নিজেদের একমাত্র সুযোগটি পেয়েছিল অস্ট্রিয়া। কিন্তু আরনোতোভিচ বারের ওপর দিয়ে মেরে সুযোগটি নষ্ট করেন।

৩৭ মিনিটে ইতালির গোল আটকে যায় পোস্টে। বক্সের অনেক বাইরে থেকে দূরপাল্লার এক বুলেট গতির শট নিয়েছিলেন ইম্মোবিলে। সেটা ওপরের দিকে বারে লেগে ফেরত আসে।

দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় অস্ট্রিয়া। গতিময় ফুটবলে ইতালির রক্ষণকে ব্যস্ত করে তুলে তারা। ৬৫ মিনিটে আনন্দের উপলক্ষও তৈরি হয়েছিল।

লেইনার উঁচু করে বল বাড়িয়ে দিয়েছিলেন বক্সের বাঁ দিকে থাকা আলাবার কাছে। আলাবা সেটা হেডে পাঠিয়ে দেন ডানদিকে আরনাটোভিচের কাছে। আরনাটোভিচ দারুণ হেডে পরাস্ত করেন ইতালির গোলরক্ষক ডোনারোমাকে। কিন্তু ভারের সাহায্যে অফ সাইড চেক করে সে গোল বাতিল করে দেন রেফারি।

এরপর দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে লড়েছে। আক্রমণ প্রতি আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। কিন্তু কোনো দলই শেষ পর্যন্ত ফিনিশিং টাচ দিতে পারেনি। বেশিরভাগ আক্রমণই পর্যবসিত হয়েছে লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে। ফলে নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হয় গোলশূন্য সমতায়।

অতিরিক্ত সময়ে এসে খেই হারিয়ে ফেলে ইতালিকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলা অস্ট্রিয়া। আজ্জুরিদের ৯০ মিনিট আটকে রাখা দলটি দশ মিনিটের ব্যবধানে হজম করে দুই গোল।

৯৫ মিনিটে প্রথম গোলটিতে অনেকটাই অপ্রস্তুত ছিল অস্ট্রিয়া রক্ষণ। স্পিনিজ্জোলার দূর থেকে উঁচু করে বাড়ানো বল বক্সের ডানদিকে পেয়ে যান বদলি হিসেবে নামা ফেদেরিকো কিয়েসা। মুখ দিয়ে বল রিসিভ করে তা পায়ে নামিয়ে দুর্দান্ত ভলিতে জাল কাঁপান এই ফরোয়ার্ড।

১০৫ মিনিটে আরও একটি আচমকা গোল খেয়ে বসে অস্ট্রিয়া। তাদের রক্ষণে জটলা বেঁধে গিয়েছিল। এর মধ্যে বল পেয়ে যান পেসিনা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই কোনাকুনি শটে দূরের পোস্ট দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে দেন তিনি। এটি ছিল চলতি ইউরোর শততম গোল।

অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে অস্ট্রিয়া। ১১৪ মিনিটে কর্নার থেকে তারা শোধও করে এক গোল। আলেসান্দ্রো শোফের কর্নারটা যদিও নিচু হয়ে মাটিতে পড়তে যাচ্ছিল, কিন্তু হাওয়ার গতিতে বক্সের ডানদিকে দৌড়ে এসে শুয়ে পড়ে অবিশ্বাস্য এক হেডে ২-১ করেন সাসা কালাজডিক।

তবে সম্ভাবনা জাগিয়েও ম্যাচটা পেনাল্টি শুটআউট পর্যন্ত নিতে পারেনি অস্ট্রিয়া। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে দুই গোলে ভর করেই শেষ আটে নাম লিখিয়েছে ইতালি।

আরো সংবাদ