সড়কে খানাখন্দ ও বৃষ্টির কারণে সড়কের অধিকাংশ জায়গা ডুবে যাওয়ায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে চলমান বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কারণে এসব খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ জনসাধারণের।
মঙ্গলবার ভোর থেকেই থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজটের পরিধি আরও বৃদ্ধি পায়। ফলে যানজট একদিকে রাজধানীর বনানী, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা, টঙ্গী-কালীগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের মিরের বাজার এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক পর্যন্ত পৌঁছে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। টঙ্গী থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত মাত্র ১২ কিলোমিটার সড়কে পৌঁছাতে যেখানে এক ঘণ্টা সময় লাগত, যানজটের কারণে এখন ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা সময় লাগছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন জনসাধারণ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টঙ্গী ব্রিজের পর থেকে স্টেশন রোড, চেরাগআলী, গাজীপুরা, বড়বাড়ি, বোর্ড বাজার, ছয়দানা, বাসন সড়ক, ভোগড়া বাইপাস ও চান্দনা চৌরাস্তা মোড় পর্যন্ত মহাসড়কের দুপাশে যানজট রয়েছে। এতে সকাল থেকে অফিসগামী মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। ভোর থেকে চলা এই যানজট সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিল।
সবুজ নামে মিলগেট এলাকার একজন পরিবহন ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, বিআরটি প্রকল্প গাজীপুরবাসীর জন্য একটি অভিশাপ। যা গত আট বছর পর্যন্ত আমাদের প্রতিনিয়ত ভোগাচ্ছে। দ্রুত এই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে না পারলে গাজীপুর বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে।
আব্দুস সবুর নামে এক বাসচালক জানান, রাস্তায় অনেক গর্ত। বৃষ্টির পানির কারণে গর্তগুলোও ভরে গেছে। বিআরটি প্রকল্পের আওতায় মহাসড়কের দুই পাশে ড্রেন তৈরি করা হচ্ছে। এর ফলে সড়ক সংকুচিত হয়ে গেছে। তাই ধীরগতিতে চলছে গাড়ি। টঙ্গী-চৌরাস্তা প্রতিনিয়ত যানজট পোহাতে হয়।
বিদেশগামী যাত্রী সামছুল করিম জানান, শেরপুর থেকে ভোর রাতে রওনা হয়েছি এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে। বিকালে আমার ফ্লাইট। দুপুরের আগেই এয়ারপোর্টে পৌঁছানোর কথা। কিন্তু এখন বেলা ২টা বাজে, যানজটে আটকা পড়ে আছি চেরাগআলি এলাকায়। ব্যাগ-লাগেজ নিয়ে হেঁটে যাওয়ারও উপায় নাই। যেই যানজট দেখছি তাতে মনে হয় না ফ্লাইট ধরতে পারব।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গত মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ৩টার দিকে আশুলিয়া বেড়িবাঁধ এলাকায় একটি পণ্যবাহী ট্রাক মহাসড়কে অকেজো হয়ে গেলে দুই লেনের রাস্তার একটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এক লেন দিয়ে দুইপাশের গাড়ি চলতে গিয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবহণের চাপ বৃদ্ধি পায়। এতে করে যানবাহনের সাড়ি দীর্ঘ হয়ে এই যানজট আব্দুল্লাহপুর হয়ে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত ছাড়িয়ে গেছে। তবে সড়কে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তারা যানজট নিরসনের চেষ্টা করছে।
তিনি জানান, এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত বিআরটির উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। এছাড়া বৃষ্টি হয়ে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে আছে। যার কারণে গত কয়েকদিন ধরেই মহাসড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।