ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করছে। অশনি ইতোমধ্যেই দুর্বল হয়ে অনেকটা শক্তি হারিয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম আজ দুপুরে বাসস’কে জানিয়েছে, এটি আরও উত্তরপশ্চিম অথবা উত্তর দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় অশনি উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড় আকারে ভারতের অন্ধ উপকূল ও এর আশপাশের পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকা অতিক্রম করছে।
তিনি জানান, এর প্রভাবে আজ বুধবার ও কাল বাংলাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এরপর ঘুর্ণিয়ঝড়জনিত বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে। তবে স্বভাবিক বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।
আবহাওয়ার সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তি ১৬ তে বলা হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় অশনি উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড় আকারে ভারতের অন্ধ উপকূল ও এর আশপাশের পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ সকাল ৬ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা
অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
আগের মতো আজও চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ২ নম্বর দূরবর্তী হঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসাথে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সমূহের জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে,
রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চল সমূহের উপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘন্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে । এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি মে মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুইটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। অন্যদিকে, মে মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। উত্তর থেকে মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত ২ থেকে ৩ দিন মাঝারি বা তীব্র কালবৈশাখী বা বজ্র ঝড় এবং অন্যস্থানে ৩ থেকে ৪ দিন হালকা বা মাঝারি কালবৈশাখী বা বজ্র ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অধিদফতরের মে মাসের দেওয়া দীর্ঘমেয়াদি আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে দেশের উত্তর ও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে ১ থেকে ২ টি তীব্র তাপ প্রবাহ এবং অন্যস্থানে ২ থেকে ৩ টি মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে