আজ - সোমবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - বিকাল ৪:৪৫

পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সর্বোচ্চ  উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন ১ হাজার ৩শ’ ২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন।
তিনি আজ সকালে এখানে একটি অনুষ্ঠানে এই বিদ্যূৎ কেন্দ্রের নাম ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব আল্ট্রা-সুপারক্রিটিকাল প্রযুক্তিসহ কয়লাভিত্তিক পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।
বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯ মহামারির প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্ব থমকে দেয়ার পর পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্ধোধনের জন্য প্রথমবারের মতো সশরীরে এই জেলা সফর করছেন শেখ হাসিনা।
পায়রা ১ হাজার ৩শ’ ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার অন্তর্গত রামনাবাদ নদীর পাশে ২ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে ১ হাজার একর জমিতে নির্মিত হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে আল্ট্রা সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বের ১৩ তম দেশে পরিণত হয়েছে।
এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের  প্রথম ৬শ’ ৬০ মেগাওয়াট ইউনিট ২০২০ সালের মে মাসে বাণিজ্যিকভাবে চালু হয় এবং পরে ৪শ’ কেভি পায়রা-গোপালগঞ্জ পাওয়ার ট্রান্সমিশন ব্যবহার করে এবং দ্বিতীয়টি ২০২১ সালের ডিসেম্বরে উৎপাদন শুরু করে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি তৈরি করেছে বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি (বিসিপিসিএল) চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন (সিএমসি) এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল) এর মধ্যে ৫০:৫০ যৌথ উদ্যোগে।
বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড এবং এনইপিসি এবং সিইসিসি-এর কনসোর্টিয়াম পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ ইপিসি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।
এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ক্ষমতা ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ছিল ৪,৯৪২ মেগাওয়াট। কিন্তু ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ২৫,৫১৪ মেগাওয়াট উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হয় এবং ১৯,৬২৬ মেগাওয়াট স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন হেলিপ্যাডে পৌঁছালে তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী পরে কয়লা জেটিতে পৌঁছানোর সাথে সাথে বিভিন্ন রঙে সজ্জিত ২শ’ জেলে সুসজ্জিত নৌকা থেকে পতাকা উড়িয়ে ও গান বাজিয়ে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান।
পর্যটন স্পট কুয়াকাটা থেকে পায়রা পাওয়ার প্লান্ট এবং এর আশপাশের এলাকাগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে উৎসবের আমেজ বিরাজমান ছিল।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং, বিসিপিসিএল’র মহাপরিচালকসহ অন্যান্যরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ-চীন পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী এএম খুরশিদুল আলম স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অগ্রগতির ওপর একটি অডিও ভিডিও উপস্থাপন এবং পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর তথ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীকে একটি স্বারক চিহ্ন উপহার দেয়। এসময় শেখ হাসিনাকে উৎসর্গ করে ‘ও জোনাকি কি সুখে ওই ডানা দু’টি মিলেছ’ গান বাজানো হয়।

আরো সংবাদ