আজ - শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - সকাল ৭:৩৬

বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের শেষ মিশনে প্রস্তুত মেসি

ক্যারিয়ারে পঞ্চম ও শেষ বিশ্বকাপ খেলতে কাতার যেতে আর খুব একটা বেশী সময় হাতে নেই আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসির। আর এই বিশ্বকাপই সম্ভবত মেসির সামনে একমাত্র বিশ্ব আসরের শিরোপা হাতে নেবার শেষ সুযোগ, যা কাজে লাগাতে মুখিয়ে আছে আর্জেন্টাইন তারকা।
কাতারে নিজের সেরাটা দিতে এখন শেষ অপেক্ষা। পিএসজির হয়ে মৌসুমের শুরু থেকেই মেসি যে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিজেকে শতভাগ প্রস্তুত করে তুলেছেন তা মাঠের পারফরমেন্সে দৃশ্যমান। বার্সেলোনা ছাড়ার ট্রমা থেকে বেরিয়ে এসে পিএসজির জার্সি গায়ে প্রথম মৌসুমটা বেশ কঠিন কেটেছিল। কিন্তু ক্যারিয়ারে আবারো ঘুড়ে দাঁড়িয়ে নিজেকে ঠিকই প্যারিসে মানিয়ে নিয়েছেন। ইতোমধ্যেই ১৮ ম্যাচে এবারের মৌসুমে ২৬টি গোল ও এ্যাসিস্ট করে ফেলেছেন।
যদিও আর্জেন্টিনা এখনো সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলারের দিকেই তাকিয়ে আছে। সাত বারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী মেসির হাতে যে এখনো বিশ্ব  শিরোপাটা উঠেনি। ২০০৬ সালে টিনএজার হিসেবে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে আসা, এরপর একে একে খেলেছেন আরো চারটি বিশ্বকাপ। জাতীয় দলের জয়ে রেকর্ড ১৬৪ ম্যাচে করেছেন রেকর্ড ৯০ গোল। ২০১৪ ও ২০১৮ বিশ্বকাপে তিনি আর্জেন্টাইন দলের অধিনায়ক ছিলেন। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে ফাইনালে খেললেও ২০১৮ সালে জর্জ সাম্পাওলির অধীনে ফ্রান্সের কাছে শেষ ১৬’তে বিদায় নিতে হয়েছিল। ফ্রান্সের শিরোপা জয়ী ঐ দলটিতে মেসির পিএসজি সতীর্থ কিলিয়ান এমবাপ্পে ছিলেন। ৩৫ বছর বয়সী মেসি এবার কাতারে আরো এটি লক্ষ্যপূরনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। নক আউট পর্বে এখনো গোল করা হয়নি মেসির, যা এবার ঘোচাতে চান পিএসজির তারকা।
সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে মেসি বলেছেন, ‘এই মুহূতে শারিরীক ভাবে আমি ভাল অনুভব করছি। গত বছর আমি যখন পিএসজিতে এসেছিলাম তার তুলনায় যা ভাল। কিন্তু বয়সের কারনে এটাই আমার শেষ বিশ্বকাপ, এটা নিশ্চিত। বিশ্বকাপ শেষ হলে দেখা যাক কি অবস্থা হয়। আর্জেন্টিনার জন্য শান্ত থাকাটা কঠিন, কারন আমরা সবাই বিশ্বকাপ জয় করতে মুখিয়ে আছি। কিন্তু বিশ্বকাপ জিততে হলে অনেক দিক থেকে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হতে হয়। কোন একটা নির্দিষ্ট ম্যাচে নয়, সার্বিকভাবে এগিয়ে যেতে হয়। আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত, যেকোন দলের বিপক্ষে নিজেদের সেরাটা দিতে চাই।’
১৯৮৬ সালে সর্বশেস বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক ছিলেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। আর্জেন্টাইন এই লিজেন্ডকে অনুকরণ করতে হলে মেসির একার পক্ষে তা সম্ভব নয়। লিওনেল স্কালোনির দলে অবশ্য মেসির থেকে ভাল মানের কোন খেলোয়াড় নেই। কিন্তু চার বছর আগের দলটির তুলনায় এবারের দলটি নিয়ে অনেকেই আশাবাদী। টানা ৩৫ ম্যাচে অপরাজিত থেকে কাতারে যাচ্ছে আর্জেন্টিনা। এর মধ্যে রয়েছে গত বছরের কোপা আমেরিকা শিরোপা, ১৯৯৩ সালের পর আর্জেন্টিনার বড় কোন শিরোপা এটি।
২০১৮ বিশ্বকাপের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় এবারো দলে টিকে রয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম কোপা আমেরিকার ফাইনালে জয়সূচক গোল করা এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। স্কালোনির দলে আরো রয়েছেন সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, মিডফিল্ডার লিনড্রো পারেডেস ও রডরিগো ডি পল ও ফরোয়ার্ড লটারো মার্টিনেজ। ইন্টার মিলানের ২৫ বছর বয়সী স্ট্রাইকার মার্টিনেজ বাছাইপর্বে সাত গোল করেছিলেন।
এবারের দলটিতে মেসির ভূমিকা কিছুটা হলেও ভিন্ন ধরনের হবে বলে মনে করেন ১৯৭৮ সালে ঘরের মাটিতে বিশ^কাপ জয়ী দলের সদস্য ওমর লারোসা। তার মতে এবারের বিশ্বকাপের একটি ভিন্ন আমেজে খেলতে যাবেন মেসি। আগের সব আসরে যেখানে সতীর্থরা মেসিকে বল বানিয়ে দিয়েছে এবার সেই কাজটা সে পালন করবে বলে মনে করেন লারোসা। সাম্প্রতিক বেশ কিছু ম্যাচে পিএসজির হয়ে কার্যত এই দায়িত্বটা পালন করেছেন মেসি।
দোহায় ফাইনাল পর্যন্ত যদি আর্জেন্টিনা খেলতে পারে তবে মেসির সামনে সুযোগ আসবে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়ার। বর্তমানে ২৫ ম্যাচ খেলা জার্মান সাবেক অধিনায়ক লোথার ম্যাথিউস এই রেকর্ড ধরে রেখেছেন।
কিন্তু সব ছাড়িয়ে শিরোপা জয়ই এখন মেসির মূল লক্ষ্য। সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে তাকে নিয়ে কোন দ্বিধা না থাকলেও বিশ্বকাপের শিরোপা জয় না করাটা কিছুটা হলেও তার ক্যারিয়ারে একটি কালো অধ্যায় হিসেবে থেকে যাবে।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত