আজ - বৃহস্পতিবার, ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সকাল ১০:২৯

যশোরে কোয়ারেন্টাইনে ঈদ করবেন আড়াই সহস্রাধিক মানুষ , রয়েছে বিশেষ খাবার

বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতফেরত আড়াই সহস্রাধিক মানুষের এবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন আবাসিক হোটেলে। তারা বঞ্চিত হবেন পরিবার পরিজনের সান্নিধ্য থেকে। গত ২৬ এপ্রিল থেকে ১৫ দিনে ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন দুই হাজার ৭০৯ জন যাত্রী। এদের মধ্যে যশোরের আবাসিক হোটেলগুলোতে এখনও কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন এক হাজার ৪৫৯ জন যাত্রী। তাদেরকে ঈদের দিনে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুর হয়। এ পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে ভারতে। সেখানে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বিধ্বংসী রূপ ধারণ করেছে। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। এ কারণে সরকার ভারতে যাতায়াতের জন্য দেশের সকল চেকপোস্ট বন্ধ করে দেয়। যাতে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দেশে প্রবেশ করতে না পারে। এসমেয় সরকার ঘোষণা দেয় শুধুমাত্র ভারতে বাংলাদেশ দূতাবাসের বিশেষ অনুমতি নিয়ে আটকে পড়া যাত্রীরা দেশে প্রবেশ করতে পারবেন। গত ২৬ এপ্রিল থেকে দেশের নির্দিষ্ট কয়েকটি চেকপোস্ট দিয়ে আটকে পড়ারা দেশে প্রবেশ করতে পারছেন। এ তালিকায় যশোরের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল চেকপোস্ট রয়েছে। গত ১৫ দিনে এ চেকপোস্ট দিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ দেশে প্রবেশ করেছে। এদের বেশিরভাগই ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনরা রয়েছেন।
জেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী, গত ২৬ এপ্রিল থেকে ১১ মে পর্যন্ত বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন দুই হাজার ৭০৯ জন যাত্রী। এদের সবাইকে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এরপর তাদের করোনা পরীক্ষার করে নেগেটিভ সার্টিফিকেট দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে। বর্তমানে যশোর ও বেনাপোলের ২৯টি আবাসিক হোটেল, গাজীর দরগাহ মাদ্রাসা, যশোর বক্ষব্যাধী হাসপাতালসহ ৫টি জেলার আবাসিক হোটেলগুলোতে এক হাজার ৪৫৯ জন ভারত ফেরত কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এদের মধ্যে যশোরের ১৬টি হোটেলে রয়েছেন ৪৭২ জন, বেনাপোলের ১৩টি হোটেলে রয়েছেন ৪৫২ জন, গাজীর দরগাহ মাদ্রসায় রয়েছেন ১৫২ জন, যশোর বক্ষব্যাধী হাসপাতালে ১০১ জন, যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রেফার্ডকৃত ৩৮ জন, অন্যান্য স্থানে রয়েছেন ২৫৪ জন। এছাড়া খুলনা বিভাগের আরো ৫টি জেলার আবাসিক হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন আরো এক হাজার ২৪৮ জন। এরমধ্যে খুলনায় ৫৩৩ জন, নড়াইলে ১২১ জন, ঝিনাইদহে ১৬৩ জন, সাতক্ষীরায় ৩৩০ জন, মাগুরায় ১০১ জন। এছাড়া মঙ্গলবার বেনাপোল বন্দর দিয়ে আসা দুইজনের আবেদনের প্রেক্ষিতে বগুড়ায় কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। এদের ধারাবাহিকভাবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষ হলে করোনা পরীক্ষার পর নেগেটিভ ফলাফল আসার পর বাড়ি পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে, ভারত থেকে আসা কোয়ারেন্টাইনে থাকা সবারই ঈদ কাটবে হোটেলের নির্জন কক্ষে। তারা পরিবার পরিজনের সান্নিধ্য বঞ্চিত হয়ে হোটেলেই কাটিয়ে দেবেন ঈদের দিনটি। অবশ্য এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন কোয়ারেন্টাইনে থাকাদের জন্য ঈদের দিনে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যশোর হোটেলসহ অন্যান্য স্থানে থাকাদের জন্য ঈদের দিন সকাল ও দুপুরে উন্নতমানের খাবার সরবরাহ করা হবে। একইসাথে শহরের আরো ৭টি খাবারের হোটেল খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব হোটেলের নম্বর কোয়ারেন্টাইনে থাকাদের মাঝে সরবরাহ করা হয়েছে। তারা এসব হোটেলে ফোনের মাধ্যমে খাবারের অর্ডার দিলেই কর্তৃপক্ষ তাদেরকে খাবার পৌছে দেবার ব্যবস্থা করবেন।
এ বিষয়ে যশোরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান বলেন, ভারতফেরত কোয়ারেন্টাইনে থাকাদের ১৪ দিন পর নেগেটিভ সনদ পাবার পর বাড়ি পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া আগতদের ইচ্ছানুযায়ী তাদেরকে নির্দিষ্ট হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মোঃ সায়েমুজ্জামান বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরে কোয়ারেন্টাইনে থাকাদের বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে তারা পরিবারের বাইরে থাকলেও ঈদের সেমাইসহ উন্নতমানের খাবার থেকে বঞ্চিত না হন।

সূত্রঃ গ্রামের কাগজ

আরো সংবাদ