আজ - রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - দুপুর ১২:৩৭

শহীদ মিনার, সুপ্রিম কোর্ট ও বিএনপি কার্যালয়ে মওদুদের প্রতি শেষশ্রদ্ধা

বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারাসহ সর্বস্তরের মানুষ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মওদুদ আহমদের প্রতি শেষশ্রদ্ধা জানিয়েছেন। শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রবীণ এ রাজনীতিবিদের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। 

এরপর বিএনপি, নাগরিক ঐক্য, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), এনডিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ মওদুদ আহমদের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘মওদুদ আহমদ সারা জীবন গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরকারে থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য অবদান রেখেছেন। তাকে হারিয়ে আমরা একজন বিশিষ্ট, বর্ণাঢ্য রাজনীতিবিদকে হারালাম। জাতি হারাল একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদকে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল একজন অভিভাবককে হারাল।

শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন পর্বে অনুপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ও মওদুদ আহমদের ভায়রা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু এ রকম হওয়া উচিত নয়।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের প্রসঙ্গ লিখতে গেলে মওদুদ আহমদের নাম বাদ দেওয়া যাবে না। একজন জাতীয় নায়ককে হারালাম আমরা।’

এ সময় মওদুদ আহমদের কফিন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, জাগপার একাংশের সভাপতি লুৎফর রহমান, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ, সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার প্রমুখ।

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে মওদুদ আহমদের একটি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়

এরপর সকাল ১০টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে মওদুদ আহমদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে তার কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন- প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি নুরুজ্জামান, বিচারপতি সৈয়দ জিয়াউল করিম, বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী, বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান, মৎস ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক দুই সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন ও মনির উল্লাহ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও শাহজাহান ওমর, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন।

এছাড়া জাতীয়তাবাদী আইনজীবী সমিতি ফোরাম, মওদুদ আহমদ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস, ল রিপোর্টার্স ফোরাম এবং ফেনী-নোয়াখালী আইনজীবী ফোরাম মওদুদ আহমদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।

পরে বেলা ১১টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মওদুদ আহমদের আরেকটি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা জানাজায় অংশ নেন। জানাজা শেষে মওদুদ আহমদের কফিন দলীয় পতাকা দিয়ে আচ্ছাদিত করা হয়। পরে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মির্জা ফখরুল। এরপর দলের বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতারা মওদুদ আহমদের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

বিএনপি কার্যালয়ের সামনে মওদুদ আহমদের জানাজায় দলীয় নেতাকর্মীদের ঢল নামে

এরপর মওদুদ আহমদের মরদেহ নিয়ে নোয়াখালীর উদ্দেশে রওনা হন স্বজনরা। দুপুর আড়াইটায় নোয়াখালীর কবিরহাট ডিগ্রি কলেজ মাঠে এবং বিকেল ৪টায় বসুরহাট কোম্পানীগঞ্জ সরকারি মুজিব মহাবিদ্যালয় মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বিকেল সাড়ে ৫টায় নিজ বাসভবনের (মানিকপুর কোম্পানিগঞ্জ) সামনে জানাজা শেষে মওদুদ আহমদের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে। 

মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথে চিকিৎ​সাধীন অবস্থায় মারা যান মওদুদ আহমদ। গত ১ ফেব্রুয়ারি তাকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সন্ধ্যায় তার মরদেহ সিঙ্গাপুর থেকে দেশে এসে পৌঁছায়। এ সময়ে তার স্ত্রী হাসনা জসীমউদ্‌দীন কফিনের সঙ্গে ছিলেন।

আরো সংবাদ