আজ - শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ১২:০৮

শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা: ৩৪ জনের জামিন বাতিল

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালিন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় তালা-কলারোয়া আসনের সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩৪ জনের জামিন বাতিল করেছেন আদালত। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন আদালত। 

বুধবার সাতক্ষীরার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবির তাদের জামিন বাতিল করেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জামিন বাতিল হওয়া অন্যদের মধ্যে রয়েছেন কলারোয়ার দুইবারের সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা আক্তারুল ইসলাম, সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আব্দুস সাত্তার, সুপ্রিম কোর্টের এ্যাড. আব্দুস সামাদ, তিনজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন, রকিবুল ইসলাম ও রবিউল ইসলাম এবং বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। এ মামলায় অভিযুক্ত ৫০ জন আসামির একজন টাইগার খোকন অন্য মামলায় জেলহাজতে আটক রয়েছে। পলাতক রয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ১৫ জন।

এর আগে বুধবার ষষ্ঠ দিনের মত রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামীপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। এতে রাষ্ট্রপক্ষে অংশ নেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন মৃধা এবং সাতক্ষীরার পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ। অপরদিকে আসামিপক্ষে অংশ নেন অ্যাড. শাহানারা আক্তার বকুল, অ্যাড. আব্দুল মজিদ, অ্যাড. মিজানুর রহমান পিন্টু, অ্যাড. আব্দুস সেলিম, অ্যাড. তোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এস এম মুনীর আদালতে ২০ জন সাক্ষীর জবানবন্দি তুলে ধরে বলেন, সাক্ষীদের বক্তব্যে সকল আসামি দোষী প্রমাণিত হয়েছে। 

তিনি সাক্ষীদের উদ্ধৃতি দিয়ে আরও বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর প্রাণে বেঁচে যাওয়া তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার ওপর বারবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। কলারোয়ার ঘটনা তারই অংশ। ন্যায়বিচার হলে সকল আসামি সর্বোচ্চ শাস্তি পাবেন।

অপরদিকে বিবাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. শাহানারা আক্তার বকুল ও  আব্দুল মজিদ বলেন, মামলার এজাহার, পুলিশের অভিযোগপত্র এবং সাক্ষীদের জবানবন্দির মধ্যে তথ্যগত ব্যাপক গরমিল ও অসংলগ্নতা রয়েছে। সাক্ষীরা কোনভাবেই আসামিদের দোষী প্রমাণ করতে পারেননি। 

তারা আরও বলেন, ঘটনার দিন সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব কলারোয়ায় উপস্থিত ছিলেন এমন কোন প্রমাণও তারা দিতে পারেননি। ন্যায়বিচার হলে সকল আসামি খালাস পাবেন।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরায় একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে মাগুরায় ফিরে যাচ্ছিলেন তৎকালিন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কলারোয়ায় পৌঁছালে তার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে তিনি প্রাণে রক্ষা পেলেও তার সফরসঙ্গী জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ফাতেমা জামান সাথী, আব্দুল মতিন, জোবায়দুল হক রাসেল এবং শহীদুল হক জীবনসহ অনেকেই আহত হন। একইসময় সাতক্ষীরার বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও হামলার শিকার হন। এ ঘটনায় কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মোসলেমউদ্দিন ২৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ মামলা থানায় রেকর্ড না হওয়ায় তিনি নালিশী আদালত সাতক্ষীরায় মামলাটি করেন। পরবর্তীতে এ মামলা খারিজ হয়ে গেলে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর ফের মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়। এসময় তদন্তকারী কর্মকর্তা সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত