আজ - বৃহস্পতিবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ৪:৪৯

শেখ হাসিনার পরের চমক কি?

ডেস্ক রিপোর্ট : শেখ হাসিনার চরম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষও স্বীকার করেন যে, রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় তিনি সবাইকে পিছনে ফেলেছেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনা নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। কৌশল এবং বিচক্ষণতায় তিনি তুলনাহীন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি। সবচেয়ে বড় কথা পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে তা তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অজানা। এজন্য একের পর এক বিস্ময় উপহার দিচ্ছেন, বিশ্বে এই মুহূর্তে সফল রাষ্ট্রনায়কদের অন্যতম শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার সর্বশেষ চমক হলো, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে যাওয়ার সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেন তাঁদের খুব কম সংখ্যক মানুষেরই এরকম সংলাপের ব্যাপারে আশাবাদ ছিল। শেখ হাসিনা সংলাপের প্রস্তাবটি লুফে নিয়ে কেবল চমকই দেখালেন না, জনমনে স্বস্তির একটি পরিবেশ সৃষ্টি করলেন। প্রায়ই বলা হয়, রাষ্ট্রনায়করা দলের উর্ধ্বে অবস্থান করেন। তাঁরা দেশ এবং জনগণের কথা চিন্তা করেন। এই ছোট্ট সিদ্ধান্ত, শেখ হাসিনার রাষ্ট্র নায়োকোচিত সিদ্ধান্তের এক ঝলক। শেষ পর্যন্ত এই সংলাপে কী ফল হবে, সেই সিদ্ধান্ত দূরে ঠেলে রেখেও বলা যায়, এটা একটি সাহসী সিদ্ধান্ত। শেখ হাসিনা এমন সব দাবি সামনে রেখে প্রতিপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন, যেখানে তার ‘পদত্যাগ’ বা মৃত্যু পরোয়ানাই মুখ্য দাবি। এই সংলাপের সিদ্ধান্তের কদিন আগেই চট্টগ্রামের জনসভায় ড. কামাল হোসেন ঘোষণা করেছিলেন যে, এই সরকারকে, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে তিনি শাস্তি দিবেন। ঐ জনসভায় ড. কামাল অন্তত পাঁচবার শাস্তির কথা বলেছিলেন। শেখ হাসিনা এরকমই, যাঁরা তাঁর মৃত্যু কামনা করে, যারা তার শাস্তি চায়, তাদের তিনি নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানান। কতটা সাহসী হলে একজন মানুষ এটা করতে পারেন?

আমরা অনুমান করতে পারি কেন এই সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন। গত কিছুদিন ধরেই রাজনৈতিক অঙ্গনে নির্বাচন নিয়ে কিছু আশংকা এবং উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছিল। এই সংলাপ কিছুটা হলেও মানুষকে আশাবাদী করে তুলেছে। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দর্শন হলো ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’। তিনি সবসময়ই অধিকারহীন, বঞ্চিত মানুষের পক্ষে কথা বলেন। সমাজের সুশীলদের চেয়ে তৃণমূলের সোজাসাপ্টা মানুষগুলোই তাঁর প্রিয়। জনগণের কথা চিন্তা করেন জন্যই, জনগণের মঙ্গল কামনা করেন জন্যই তিনি সাহসী। সাহসী জন্যই যেকোনো সিদ্ধান্ত তিনি অকপটে নিতে পারেন। সাম্প্রতিক সময়ে যদি কেউ শেখ হাসিনার বক্তৃতাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন, সেখানে দেখবেন তিনি একটি কথা বারবার বেশ জোর দিয়েই বলছেন, ‘জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নাই।‘ জনগণের প্রতি প্রচণ্ড আস্থাশীল এই মানুষটির হাত দিয়েই এদেশে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি সবকিছুই করতে পারেন। ২০১৪’র নির্বাচনের পর যেমন কেউ ভাবতে পারেনি দশম জাতীয় সংসদ পূর্ণ মেয়াদ কাটাবে, ওই নির্বাচন যেমন ছিল শেখ হাসিনার এক চমক, তেমনি এই সংলাপের সিদ্ধান্তও এক চমক। এরপর সংলাপে কি চমক দেখাবেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা?

আরো সংবাদ