বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে প্রশ্ন ছিল, বোর্ডের চুক্তিবদ্ধ কোনো খেলোয়াড় বোর্ডের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে কি না? এ বিষয়ে কোড অব কন্ডাক্ট কী বলে? উত্তরে সাবেক অধিনায়ক আকরাম খানের কণ্ঠে ঝড়ে পড়ল আক্ষেপ, ফিরে গেলেন নিজের খেলোয়াড়ি জীবনে।
অনেকটা ক্ষোভ নিয়েই বলেন, ‘আমরা যখন খেলোয়াড় ছিলাম, তখন কিন্তু ২০-৩০ হাজার টাকায়ও চুক্তিতে সাক্ষর করেছি। আমরা বোর্ডের বিরুদ্ধে কোনোদিন কিছু বলিনি। আর বলা… এটা নিয়েই আমরা বোর্ড মিটিংয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিবো, যেটা আমরা আলাপ করেছি।’
আকরাম খানকে এ প্রশ্ন করা হয়েছে মূলত বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের একটি সাক্ষাৎকারের প্রেক্ষিতে। যেখানে সাকিব প্রশ্ন তুলেছেন বোর্ডের সার্বিক কর্মকাণ্ড নিয়ে। শুধুমাত্র সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও গেম ডেভেলপমেন্ট চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন ছাড়া বোর্ডের আর কেউ ক্রিকেটে নিয়ে ভাবে না বলে মন্তব্য করেছেন সাকিব।
শুধু তাই নয়, সেই সাক্ষাৎকারে সরাসরি ক্রিকেট অপারেশনস কমিটি ও হাই পারফরম্যানস ইউনিটের কর্মকাণ্ড নিয়েও অভিযোগের তীর ছুড়েছেন সাকিব। স্বাভাবিকভাবেই সবার অপেক্ষা ছিল, সাকিবের এমন বক্তব্যের পর বিসিবির অবস্থান কী হবে? তারা কি এর প্রেক্ষিতে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন? নিলে সেটি কেমন হতে পারে?
এসব বিষয়ে যখন চলছিল আলোচনা, তখন বিসিবি বস নাজমুল হাসান পাপনের বাসায় বৈঠকে বসেন বিসিবির কর্তারা। বাসার ঐ বৈঠকে নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে বোর্ড পরিচালক মাহবুব আনাম, ইসমাইল হায়দার মল্লিক, সিইও নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন এবং অভিযুক্ত আকরাম খান ও নাইমুর রহমান দুর্জয় উপস্থিত ছিলেন।
তবে সেখানে সাকিব ইস্যুর চেয়ে জাতীয় দল নিয়েই বেশি আলোচনা হয়েছে বলে জানান ক্রিকেট অপারেশন কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান ও হাই পারফরম্যানস ইউনিটের প্রধান নাইমুর রহমান দুর্জয়। দুজনই বলেছেন, সাকিবের ফেসবুক লাইভটি পুরোটা দেখেননি তারা। দেখার পর নেয়া হবে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত।
আকরাম বলেছেন, ‘আসলে কোন ব্যক্তি নিয়ে কারও সামনে কিছু বলব না। সাধারণত প্রত্যেকটা ম্যাচের পরই আমরা এখানে (পাপনের বাসা) বসি। ওটার সঙ্গে আমাদের এটার একটা আলাপ ছিল। কিন্তু যেহেতু সে লম্বা একটা সাক্ষাৎকার দিয়েছে এবং এখানে ক্রিকেট অপারেশনস না, এইচপি ও অন্যান্য বিষয় নিয়েও কথা ছিল। তো সেটা পুরো দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
প্রায় একই কথা দুর্জয়ের কণ্ঠেও। তিনি বলেছেন, ‘বোর্ডের ব্যাপারটা হচ্ছে আরেকটু বড় পরিসরে, আজকের মিটিংটা ছিল নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা ট্যুর এসব বিষয়ে, সেই সঙ্গে এই বিষয়টা চলে এসেছে। বললে হয়ত বিশ্বাসও করবেন না যে আমি সাক্ষাৎকারটা দেখিও নাই, শুনিও নাই। সেখানে এইচপি নিয়ে যেহেতু বলা হয়েছে, সেখানে আমি আইডিয়াটা পেলাম যেটা আপনারা বললেন।’
তবে দুর্জয় কথা বলেছেন, তার ডিপার্টমেন্টের ওপর ওঠা প্রশ্নের ব্যাপারেও। সাকিব অভিযোগ করেছেন, গত ৪-৫ বছর হাই পারফরম্যান্স ইউনিট কোনো খেলোয়াড় বের করতে পারেনি। এর জবাবে দুর্জয় বলেছেন, ‘আমার কাছে শেষ ৪-৫ বছরের লিস্ট আছে। কারা কারা উঠে এসেছে। যদি আপনারা বলেন, তো আমি দিতে পারব।’