আজ - শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - সকাল ৭:১৬

দেশের উন্নয়ন মানে প্রতিটি পরিবারের উন্নয়ন: প্রধানমন্ত্রী

অবকাঠামোসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর আধুনিকায়ন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গাজীপুরের সফিপুরে বাহিনীর ৪২তম জাতীয় সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এ কথা জানান।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে সমাবেশে বক্তব্য দেন সরকারপ্রধান। এতে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার আনসারকে সব দিক দিয়ে আধুনিকায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে। রেঞ্জ, জেলা, উপজেলা পর্যায়ে বাহিনীর জন্য আধুনিক ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে।

বক্তব্যে সরকারপ্রধান আনসার-ভিডিপির উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন। ওই সময় তিনি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে ভূমিকা রাখায় আনসার সদস্যদের প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, পাবনার রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র, কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে উন্নয়ন মহাযজ্ঞ, চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণসহ সরকারের মহাপ্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন আনসার সদস্যরা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসের সময় রেললাইনের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেছেন আনসার সদস্যরা। সে সময় তাদের অনেককে জীবন দিতে হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারিতেও তারা যথাযথভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছেন।

আনসার-ভিডিপির উন্নয়নে গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের সময় আনসার বাহিনীর অনেক সমস্যা ছিলো। আওয়ামী লীগ এসে তাদের প্রমোশনের ব্যবস্থা করেছিলো।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে আনসার বাহিনীর চাকরি স্থায়ী করার পদক্ষেপ নেয়া হয়। এখন ছয় বছর চাকরি করার পর স্থায়ী করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক থেকে যথাযথভাবে ঋণ দেয়া হয়। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরনের ঋণ বিতরণ করা হয়।

তিনি বলেন, করোনাকালে আনসার-ভিডিপি ব্যাংকে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। এ ব্যাংক থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ দেয়া হয়েছে। ব্যাংকের নিজস্ব ভবন নেই। সেই ভবন যাতে নির্মাণ হয়, সে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদমুক্ত দেশ গড়তে চায় জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আনসার বাহিনী তা বাস্তবায়নে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।

শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উন্নয়ন মানে প্রতিটি পরিবারের উন্নয়ন। এ জন্য দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যকে নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ শান্তির দেশ। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়। আর দেশের উন্নয়ন মানে প্রতিটি পরিবারের উন্নয়ন।

‘প্রতিটি পরিবার সচ্ছলভাবে জীবনযাপন করুক, সুন্দরভাবে বাঁচুক, সেটাই আমরা চাই। সে জন্যই একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রাখা একান্তভাবে প্রয়োজন।’

বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যাতে আর কখনো কেউ ব্যাহত করতে না পারে, সে জন্য ২১০০ সাল পর্যন্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাবো। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। আমরা প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি। অর্থনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী হচ্ছে। এই ক্ষেত্রে আমি মনে করি আপনাদেরও যথেষ্ট অবদান রয়েছে। সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করবেন, সেটাই আমি আশা করি।

বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন, ভূমিহীন থাকবে না বলে নিজের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা যাতে অব্যাহত থাকে, তার জন্য সবার প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সবাই প্রচেষ্টা নেবেন, সেটাই আমি আশা করি।

আনসার বাহিনীর সদস্যদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে একটি ফান্ড গঠন করা হবে বলেও জানান সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, আমরা আরেকটা পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি, বাংলাদেশ আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট একটা ফান্ড গঠন করা হবে। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন, অনেকেই কাজ করতে পারেন না, বয়োবৃদ্ধ হয়ে যান, নানা ধরনের অসুবিধায় পড়েন।

‘তখন এই ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ফান্ড থেকে যাতে সহযোগিতা করা যায়, তার জন্যই আমরা একটা ট্রাস্ট ফান্ড করে দেব। এখানে সিড মানি যেটা, সেটার ব্যবস্থাও আমি করে দেবো।’

সরকারের দায়িত্বের দিকটি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার কথাটা হচ্ছে, যারা যে কাজে দায়িত্বে থাকবেন, সে কাজটা যেন যথাযথভাবে করতে পারেন, আন্তরিকতার সঙ্গে করতে পারেন, সেই দিকটা, সেই সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করা, সেটাই হচ্ছে আমাদের দায়িত্ব, সরকারের দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি। কাজেই সেই বিষয়টার দিকে সবসময় নজর দিয়েছি।

ক্রীড়া ক্ষেত্রে আনসার ও ভিডিপির সাফল্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেকোনো খেলাধুলার প্রতিযোগিতায় আনসার বাহিনীর সদস্যরা যথেষ্ট সাফল্য দেখান। খেলাধুলায় অসামান্য কৃতিত্বের জন্য এই বাহিনীর রয়েছে স্বাধীনতা পদক।

‘ক্রীড়া ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করায় এই বাহিনীকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই এবং এই বাহিনী নিয়ে আমি গর্ববোধ করি।’

এ বছর বাহিনীর ১৬২ সদস্যকে সাহসিকতার স্বীকৃতি হিসেবে পদক দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তাদের পদক তুলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

ওই সময় মুজিব প্রাঙ্গণ, আনসার ও ভিডিপি একাডেমিসহ বাহিনীর উন্নয়নে বিভিন্ন ভবন ও স্থাপনার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত