আজ - সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সকাল ৭:৫৬

বিল গেটসের প্রেমকাহিনী, ‘মেলিন্ডার অনেক বয়ফ্রেন্ড’

বিয়ের আগেও অন্য মেয়ের প্রেমে পড়েছিলেন মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। স্ত্রী মেলিন্ডা গেটসের সঙ্গে সাক্ষাত ও বিয়ের পূর্ববর্তী সময়ের মধ্যে মাইক্রোসফটের আরেক নির্বাহী স্টেফানি রিচেলের সঙ্গে তার ৭ মাসের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। এ সময়ে তাকে প্রচুর রোমান্টিক ইমেইল পাঠিয়েছেন বিল গেটস। যুক্তরাষ্ট্রে লং উইকএন্ড বলে পরিচিত ছুটিতে তাকে নিয়ে ছুটে গিয়েছেন লন্ডনে। সেখানে হোটেলে অবস্থান করেছেন দু’জনে। ঘুরে বেরিয়েছেন সমুদ্র সৈকতে। কখনোবা তারা ছুটে গেছেন নিষিদ্ধ পল্লীতে। ১৯৮৭ সাল নাগাদ অ্যান উইনব্লাড নামে এক পুঁজিবাদী নারীর সঙ্গেও সম্পর্ক ছিল বিল গেটসের।মেলিন্ডা অ্যান ফ্রেঞ্চকে বিয়ের আগে তার কাছ থেকে সম্মতি নিয়েছিলেন বিল গেটস। তার আগে তারা চুটিয়ে প্রেম করেছেন। সমুদ্রের পাড়ে বসে বলেছেন প্রেমের গল্পগাঁথা। এসব কথা এখন পুরনো। নতুন করে কি ঘটলো বিল গেটস-মেলিন্ডা গেটসের মধ্যে, যার জন্য ৭ বছরের চুটিয়ে প্রেম, তারপর বিয়ে, ২৭ বছরের দাম্পত্য জীবন- সব মিলিয়ে ৩৪ বছরের প্রেমের এক ঝড়ো ইনিংস খেলার পর দু’জন দু’মেরুতে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নিলেন! এ প্রশ্ন এখন বিলিয়ন ডলারের। এর মধ্যে কিছু কিছু বিষয়ে দু’জনেই ইঙ্গিত দেয়ার চেষ্টা করেছেন। মেলিন্ডা বলেছেন, দিনের মধ্যে ১৬ ঘন্টা কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বিল গেটস। পরিবারের দিকে তার মন নেই। অনেকবার এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়াও হয়েছে। অন্যদিকে মেলিন্ডা সম্পর্কে বিল গেটস বলেছেন, তার তো অনেক বয়ফ্রেন্ড আছে। আর আমার আছে মাইক্রোসফট। এসব নিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের সম্পর্কে ঝড় চলছিল। সেই ঝড়কে কাটিয়ে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন তারা। দাবি করা হয় যে, তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক বেশ কয়েকবার ভেঙেই পড়েছিল। এসব নিয়ে একটি দীর্ঘ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বৃটেনের জনপ্রিয় একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ।
বিল গেটস এবং মেলিন্ডা গেটসকে দেখা হতো ‘পাওয়ার কাপল’ বা শক্তিধর দম্পতি হিসেবে। তাদের জীবনের শুরু ঝড়ো গতিতে। কিন্তু এই চমৎকার ভালবাসার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে বিল গেটসের মাইক্রোসফটের প্রতি অতিমাত্রায় আত্মত্যাগ। এর ফলে এই দম্পতি সুখী দাম্পত্যের সংজ্ঞা খুঁজে পেতে ব্যর্থ হন বলে লিখেছেন সাংবাদিক টম লিওনার্দ। তাদের মধ্যে এর আগে ১৩০০০ কোটি ডলারের বিচ্ছেদের কথা বলা হলেও তা এখন ১৪৬০০ কোটি ডলারের বিষয় বলে জানানো হয়েছে। সারাবিশ্বে তাদের রয়েছে মানবসেবার চমৎকার সংগঠন দ্য গেটস ফাউন্ডেশন। এজন্য যেকেউ তাদের সাধুবাদ জানান। তাদের সম্পর্ক ভেঙে যাবে বা যেতে পারে এমনটা কারো আন্দাজেও ছিল না। কিন্তু মন বলে কথা। সেই মন যখন বিগড়ে যায়, তাকে লোহার শিকল দিয়েও বেঁধে রাখা যায় না। ফলে কিভাবে সম্পদের ভাগাভাগি হবে, কিভাবে বিচ্ছেদ চূড়ান্ত হবে এ বিষয়ে দু’জনে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। তবে তা গোপন রাখা হয়েছে।

রিপোর্টে বলা হচ্ছে, বেশির ভাগ স্বামী যেমন, কখনোই সম্ভবত তেমন ছিলেন না বিল গেটস। এই বিয়ের আগেই মাত্র ৩১ বছর বয়সে সবচেয়ে কম বয়সী বিলিয়নিয়ার হয়ে ওঠেন বিল গেটস। কিন্তু ২৭ বছর দাম্পত্য জীবন কাটানোর পর কি কারণে বিল গেটস বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিলেন সে রেকর্ড ইতিহাসের কাছে নেই। মারা যাওয়ার পর দু’জনেই তাদের জীবদ্দশার অর্ধেক সম্পত্তি দাতব্য সংস্থাগুলোকে দান করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাদের প্রতিষ্ঠা করা ৫০০০ কোটি ডলারের গেটস ফাউন্ডেশন বিশ্বের সবচেয়ে বড় জনহিতৈষী সংগঠন। এ ছাড়া তারা জনস্বাস্থ্য এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার করে দান করেন প্রতি বছর। যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি ফার্মল্যান্ডের মালিক তারা। আর বিলাসবহুল বাড়ি তো আছেই। এর মধ্যে ওয়াশিংটন স্টেটে আছে ১২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ৬৬ হাজার বর্গফুটের একটি ম্যানসন। এসব নিয়ে বিল গেটস সারাবিশ্বের চতুর্থ সবচেয়ে বড় ধনী। ৬৫ বছর বয়সী গেটস যখন দাম্পত্য সম্পর্কের ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছেন, তখন তা সারা বিশ্বে এক হতাশার আবহ ছড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে প্রযুক্তি খাত এবং জনহিতৈষী বিষয়ক কর্মকাণ্ডে। এসব কাজে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছেন এই দম্পতি।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাইরে থেকে এত ভাল সম্পর্ক দেখা গেলেও, তাদের মধ্যে সম্প্রতিক সময়ে যথেষ্ট মনোমালিন্য হয়েছে। ঝগড়া হয়েছে। তবু তারা বিয়েকে টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করেছেন। দাবি করা হয়, বেশ কয়েকবার তাদের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়। বিশেষ করে ৫৬ বছর বয়সী মেলিন্ডা গেটস মাঝে মাঝেই ইঙ্গিত দেয়ার চেষ্টা করেছেন, বিল গেটস দিনে ১৬ ঘন্টা কাজ করেন। এর ফলে পারিবারিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন তিনি। এর ফলে বৈবাহিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা অবিশ্বাস্য রকম কঠিন। এরই এক পর্যায়ে গত বছর বিল গেটস মাইক্রোসফট ও আরেকটি বড় কোম্পানি বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন, যাতে পরিবারকে অধিক সময় দিতে পারেন। ২০১৯ সালে মেলিন্ডা গেটস বলেছিলেন, বিল গেটস বিয়ে করার সময় যে দোদুল্যমনতায় ভুগছিলেন তা হলো, তিনি খুব বেশি পরিষ্কার ছিলেন যে, যদি বিয়ে করি তাহলে কাজ এবং পরিবারের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারবো কিনা? দু’বছর আগে তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে ধৈর্য্য ধারণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠে। কারণ, বিল গেটস ছিলেন কাজের প্রতি আসক্ত। তা সত্ত্বেও একবার তিনি বিল গেটসের সঙ্গে প্রচণ্ড রাগারাগি করেন। এর কারণ কি? মেলিন্ডা বলেন, বাইরে গাড়ির জট ছুটানো এবং বাচ্চাদের প্রস্তুত করে দেয়ায় সহায়তা করার পরিবর্তে বিল গেটস বাসায় বসে তখন পড়ছিলেন উইনস্টন চার্চিলকে নিয়ে লেখা বই।

বিল গেটসের সুনাম, সুখ্যাতি সর্বধিক প্রচারিত। এছাড়া সামাজিক কর্মকাণ্ডে তার আছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। তা সত্ত্বেও ১৯৯২ সালে তিনি মাইক্রোসফটের আরেক নির্বাহী সুন্দরী স্টেফানি রিচেলের সঙ্গে চুটিয়ে ৭ মাসের প্রেমের ইনিংস খেলে যান। এখানে দৃষ্টি দেয়ার বিষয়- ১৯৯২ সালটি হলো মেলিন্ডার সঙ্গে বিল গেটসের সাক্ষাত ও বিয়ের মধ্যবর্তী সময়। ১৯৮৭ সালে নিউ ইয়র্কের এক ব্যবসায়িক নৈশভোজে পাশাপাশি চেয়ারে একই টেবিলে বসেছিলেন বিল গেটস ও মেলিন্ডা। সেখান থেকেই তাদের প্রেমপর্ব শুরু। অবশ্য তখন বিল গেটসের মাইক্রোসফটের একটি প্রডাক্ট ম্যানেজার মেলিন্ডা। সেই যে চোখে চোখ তা টানা ৭ বছর টিকে থাকে। এরপর ১৯৯৪ সালে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এর অর্থ হলো একই সময়ে মেলিন্ডা এবং স্টেফানির সঙ্গে প্রেমের ঝড়ো ইনিংস খেলছিলেন বিল গেটস। এর বাইরে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত বিল গেটসের ছিল আরেকজন গার্লফ্রেন্ড। তিনি অ্যান উইনব্লাড। মেলিন্ডাকে বিয়ে করার আগে তার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছিলেন বিল গেটস। মেলিন্ডাকে বিয়ের আগে উদ্ভট একটি চুক্তি হয়েছিল বিল গেটস ও মেলিন্ডার। তাতে বলা হয়েছিল, প্রতি বছর তিনি মেলিন্ডাকে ছেড়ে কিছু সময় বাইরে কাটাবেন। এ সময়ে তিনি সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মিসেস উইনব্লাডকে নিয়ে ছুটে যাবেন কোন সমুদ্র সৈকতে।

বিল গেটস কঠোর এক ব্যবসায়ী হলেও তার আছে বর্ণিল রোমান্টিক জীবন। এক পর্যায়ে মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা পল অ্যালেনের ক্যান্সার ধরা পড়ে। বিল গেটস তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের সমূলে বিনাশ করে দেন বলে বলাবলি আছে। অভিযোগ আছে, পল অ্যালেনের বিরুদ্ধে তিনি ষড়যন্ত্র সাজিয়েছিলেন। তাকে সঠিক পথে ধরে রাখার জন্য পর্দার ভিতরের মানুষরা কৃতীত্ব দেন মেলিন্ডা গেটসকে। তিনি ১৯৮৭ সালে মাইক্রোসফটের প্রডাক্ট ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেয়ার পরপরই নিউ ইয়র্কের সিয়াটলভিত্তিক এই কোম্পানির এক নৈশভোজে ভাগ্যক্রমে আসন জুটে যায় বিল গেটসের পাশে। মেলিন্ডা বলেন, সেখানে সাক্ষাতের পর তার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন বিল গেটস। তবে তার উদ্দেশ্য কি সেটা জানাতে বেশ সময় নেন। এক শনিবার বিকেলে মাইক্রোসফটের কার পার্কে যেন পাকড়াও করে ধরলেন মেলিন্ডাকে। তাকে প্রস্তাব দিলেন দু’সপ্তাহ পরে শুক্রবার তিনি তাকে নিয়ে বাইরে যেতে চান। মেলিন্ডা সেই প্রস্তাব সম্পর্কে বলেন- আমি শুনে হেসেছি। তারপর বলেছি, এটা আমার জন্য যথেষ্ট স্বতঃস্ফূর্ত নয়। ওই সময়ের কাছাকাছি আমাকে জানাবেন। এটা বলেই তাকে আমার মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে দিলাম। এর দু’ঘন্টা পরে তিনি আমাকে বাসায় ফোন করলেন এবং ওই সন্ধ্যায় আমাকে বাইরে আমন্ত্রণ জানালেন। জানতে চাইলেন- এটা নিশ্চয় আপনার কাছে উপযুক্ত সময়?

মেলিন্ডা দেখতে পান তাদের মধ্যে অনেক কিছুতেই মিল আছে। তারা দু’জনেই ‘পাজল’ পছন্দ করেন। তীব্র প্রতিযোগিতাপরায়ণ। মেলিন্ডা বলেন, আমরা পাজল প্রতিযোগিতা করেছি। অংকের গেম নিয়ে খেলেছি। তিনি মনে করেন এতে হয়তো বিল তার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে যখন ক্লুডু গেমসে বিলকে তিনি পরাজিত করেন। এ সময়ে মেলিন্ডার মাঝে শুধুই প্রেম খুঁজছিলেন বিল গেটস। তিনি তখন লিখেছেন জনপ্রিয় উপন্যাস ‘দ্য গ্রেট গ্যাটসবি’। মেলিন্ডা এই উপন্যাস দু’বার পড়েছেন। এটা জানতে পেরে খুশিতে উদ্বেলিত হয়ে পড়েন বিল গেটস। মেলিন্ডা বলেন, সম্ভবত তখনই তিনি জেনেছিলেন তার সঙ্গে আমার ‘ম্যাচ’ জমে উঠবে। এই ম্যাচ তার রোমান্টিক। আমিও জেনে গিয়েছিলাম, আমার ম্যাচ মিলে গেছে। তার মিউজিক কালেকশন আমি দেখেছি। তার মধ্যে আছে প্রচুর ফ্রাঙ্ক সিনাত্রা এবং ডিওনে ওয়ারউইক।

প্রথমদিকে তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক ছিল। সেটা নিয়ে বিল গেটস বলেছিলেন, মেলিন্ডার আছে অনেক বয়ফ্রেন্ড। আর আমার আছে মাইক্রোফট। এক বছর তারা দু’জনেই বলেছেন- আই লাভ ইউ। এরই মধ্যে মাথা ঢুকিয়ে দেন মাইক্রোসফটের জার্মানভিত্তিক ২৫ বছর বয়সী যুবতী স্টেফানি রিচেল। মন্টিকার্লোতে এক ব্যবসায়ী মিটিংয়ে দু’জনের সাক্ষাত হয়। তার প্রেমে পড়ে যান বিল গেটস। বোমার মতো একের পর এক রোমান্টিক ইমেইল পাঠাতে থাকেন তাকে। এতে বিব্রত হয়ে পড়েন স্টেফানি। এভাবেই চলতে থাকে সাত মাসের উত্তুঙ্গু প্রেম। এ সময়ে স্টেফানিকে নিয়ে তিনি লন্ডনের বিলাসবহুল হোটেলে সময় কাটিয়েছেন। সিয়াটল এস্টেটের গেটকিপারের কটেজে সময় কাটিয়েছেন। এমনকি অ্যামস্টার্ডামের নিষিদ্ধ পল্লী সফর করেছেন দু’জনে। মিস স্টেফানি বলেন, এক পর্যায়ে তিনি এই সম্পর্কের ইতি টানেন। কিন্তু তাকে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেছিলেন বিল গেটস। পরে তিনি বিল গেটসকে বিরক্তিকর হিসেবে মনে করতে থাকেন। তিনি জানেন, তাকে বাধা দিলে চাকরির ভয় আছে। এটা জেনে সব করে গেছেন।

অন্যদিকে মেলিন্ডা গেটস বলেন, মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা করার জন্য হার্ভার্ডের পড়াশোনা ত্যাগ করেন বিল গেটস। তিনিই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিয়ে করবেন নাকি সম্পর্কের ইতি ঘটাবেন। মেলিন্ডা বলেন, একদিন তিনি বিল গেটসের বেডরুমে প্রবেশ করেন। দেখতে পান তিনি হোয়াইটবোর্ডে একটি তালিকা করছেন। এর মধ্যে ছিল বিয়ে করলে কি কি বিষয় থাকবে তা। তবে বিল গেটস কি লিখেছিলেন তা এখনও প্রকাশ পায়নি। বিল গেটস বলেন তিনি বিয়ের বিষয়টিকে কতটা সিরিয়াসলি নিয়েছিলেন এতে তা ফুটে উঠেছে। ২০১৯ সালে এক ডকুমেন্টারিতে মেলিন্ডা বলেন, বিল গেটসের পিতা বিল সিনিয়র একজন আইনজীবী এবং মা মেরি একজন ব্যবসায়ী। তাদের দু’জনেরই ক্যারিয়ার ছিল। এর মধ্যেই বিল গেটস বিয়ে করতে চাইলেন। কিন্তু তিনি জানতেন না তিনি বিয়ে নাকি মাইক্রোসফটের প্রতি বেশি কমিটেড থাকবেন।

অবশেষে ১৯৯৪ সালের নববর্ষের দিনে হাওয়াইয়ে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিল গেটসের বয়স তখন ৩৮ বছর। মেলিন্ডা ২৯। পরে বিয়েকে একটি প্রকৃত সমতাভিত্তিক অংশীদারিত্ব হিসেবে বর্ণনা করেন বিল গেটস। মেলিন্ডাও মাইক্রোসফটের জন্য প্রচুর কাজ করেন। তারা চীনে একটি অবকাশযাপন শেষ করার পর মেলিন্ডা অন্তঃসত্ত্বা হন। কারণ, তিনি চাইছিলেন বিল গেটসকে কিছুটা বিশ্রাম দিতে। দিনে ১৬ ঘন্টা কাজ করা একজন মানুষের মাথা আসলে ঠিক থাকে না। তাই তাকে বিশ্রাম দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন মেলিন্ডা।

১৯৯৬ সালে প্রথম কন্যাসন্তান জন্ম নেয় তাদের। তার জন্মের আগে মেলিন্ডা তার স্বামীকে জানান যে, তিনি বাড়িতে একজন গৃহকর্তৃর মতো অবস্থান করতে চান। এতে বিল গেটস হতাশ হয়ে পড়েন। মেলিন্ডা বলেন, এ সময় যেন আকাশ থেকে পড়েন বিল গেটস। বলেন, তুমি কি বলতে চাইছো, কাজে ফিরবে না? মেলিন্ডা নিজের অবস্থান বর্ণনা করে বলেন, তিনি বিবাহিত জীবনে খুব বেশি একা হয়ে পড়েন। জেনিফার জন্মের পরের সময়টা বিশেষ করে। কারণ, তখন কাজে খুব বেশি সময় দিতে থাকেন গেটস। মেলিন্ডা বলেন, তিনি তখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সবাই তাকে চান। আমিও ভেবে নিই, হয়তো তিনি তাত্ত্বিকভাবে সন্তান চেয়েছেন, বাস্তবে নয়।

আরো সংবাদ