আজ - রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সন্ধ্যা ৬:৪২

১৯ আগস্ট খুলছে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: আগামীকল ১৯শে আগস্ট থেকে আপনার আনন্দ ভ্রমন হোক কুয়াকাটায়, ১৯ আগস্ট থেকে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই কুয়াকাটায় পর্যটন ব্যবসায়ীরা, স্থানীয়দের মুখে আনন্দের হাসি দেখা গিয়েছে, সরকার যে নির্দেশ দিয়েছে তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য,পর্যটনকেন্দ্র-রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র আসন সংখ্যা শতকরা ৫০ ভাগ ব্যবহার করে চালু করতে পারবে। সবি সরকারি নিয়ম মানতে ইচ্ছুক কুয়াকাটার পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

টানা ১৩৯ দিন বন্ধ থাকার পর আগামী ১৯ আগষ্ট কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের দরজা খুলছে খুলছে। পহেলা এপ্রিল থেকে বন্ধ থাকা পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ার ঘোষণায়, নতুন রূপ নিয়ে ফিরছে বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি সমুদ্র কন্যা কুয়াকাটা, রঙিন সাজে সজ্জিত হয়েছে কুয়াকাটার হোটেল-মোটেলগুলো। নতুন করে সাজিয়ে নিচ্ছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।

করোনা পরিস্থিতির কারণে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন গত ১ এপ্রিল থেকে কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করে। শুন্য হয়ে পড়ে এখানকার প্রায় দেড়শ আবাসিক হোটেল-মোটেল। বন্ধ হয়ে যায় পর্যটনকেন্দ্রিক সব ব্যবসা-বাণিজ্য। শুন্যতা নেমে আসে কুয়াকাটার ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকতে কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনতে হেয়ছে। দেশের সকল সেক্টরে অনুদান থাকলেও এই ট্যুরিজম সেক্টরে কোন অনুদান না থাকায় অসহায় হয়ে পরছেন অনেক ব্যবসায়ীরা। অবশেষে সব বিপদ কাটিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে সরকার।

হোটেল সমুদ্র বিলাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মোঃ ইসমাইল ইমন শেখ বলেন, আগামীকাল ১৯আগস্ট থেকে, আমাদের পর্যটন কেন্দ্রের সাথে জড়িত সকল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সরকার, আমরা সকলে আনন্দিত ইতিমধ্যে হোটেল কর্মচারী এসে হোটেলকে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

এদিকে হোটেল আল বেলালের মালিক, মাসুম আল বেলাল জানান, খবর শোনার সাথে সাথে পর্যটকদের বরণ করার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি, আমরা পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেবা দেওয়ার পরিকল্পনা করছি, আমন্ত্রণ কিত পর্যটকদের সেবা দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।

হোটেল পাঁচতারার রেস্টুরেন্ট মালিক, কাজী মোঃ সেন্টু বলেন, পর্যটকদের সুস্বাদু খাবার পরিবেশন করব আমরা, পর্যটকের জন্য খাবারের সুন্দর সুন্দর আইটেম রাখা হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে তৈরি করা হবে খাবার ইতিমধ্যে পর্যটকদের আমার ফোনে কিছু খাবারের অর্ডার পেয়েছি।

এদিকে টুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সভাপতি, জাকারিয়া জাহিদ জানান, পর্যটকদের সমুদ্রপথে আনন্দ ভ্রমণ করানোর জন্য আমরা সবকিছু সুন্দরভাবে তৈরি রাখা হয়েছে।

সামাজিক সংগঠন কুয়াকাটা শুভ সংঘ ক্লাবের সভাপতি, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ জানান, আমরা সব সময় পর্যটকদের আনন্দ দেওয়ার জন্য নানা ধরনের অনুষ্ঠান করে থাকি, এবারও প্রথম দিন পর্যটকদের জন্য একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে পর্যটকদের সেবার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব (কুটুম) সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে। বেচাকেনা না থাকায় অনেক মালিককে দোকানপাট ছেড়ে দিতে হয়েছে। এখন পর্যটনের দ্বার খুলছে শুনে সবাই যে যাঁর মতো করে গুছিয়ে ব্যবসা চাঙা করার পরিকল্পনা করছেন।

কুয়াকাটায় ১৬০টির মতো আবাসিক হোটেল–মোটেল রয়েছে। হোটেল-মেটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, প্রতিটি হোটেলের মালিকই বড় রকমের আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন। টাকার অঙ্কে হিসাব করলে গত দেড় বছরে হোটেল ব্যবসায় কমপক্ষে ২০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। পর্যটনকেন্দ্রিক সব ব্যবসা মিলিয়ে কমপক্ষে দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ‘করোনাকালের পর পর্যটনের দ্বার উম্মুক্ত হলে কুয়াকাটা স্বরূপে ফিরবে, সে আশায় বুক বেঁধে আছি’, জানান তিনি।

কুয়াকাটা ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনির শরীফ জানান, আমার ৩নং ওয়ার্ড কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থান, আমি সব সময় প্রস্তুত রয়েছি পর্যটন ব্যবসার সংশ্লিষ্ট সবকিছু সুন্দরভাবে দেখাশোনার জন্য রয়েছি, আমার ওয়ার্ডের সামাজিক সংগঠনগুলো আমি তৈরি রেখেছি।

কুয়াকাটা পৌর মেয়র, আনোয়ার হাওলাদার বলেন, পর্যটন ব্যবসায়ীসহ পর্যটকদের পৌরসভার পক্ষ থেকে সকল ধরনের পজেটিভ সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট ও বিনোদনকেন্দ্র আসন সংখ্যার ৫০ শতাংশ ব্যবহার করে চালু করতে পারবেনা। করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। রাত ৮ পরে সীবিচে কেউ ঘোরাঘুরি করতে পারবে না। এর ব্যত্যয় যাঁরা করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরো সংবাদ