ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা বসছে শনিবার (৭ মে)। জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে দলটির এ সভাকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন নেতারা। এতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাঠপর্যায়ের প্রস্তুতি, জাতীয় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি ও সমসাময়িক জাতীয়-আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনাসহ সাংগঠনিক বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। সভার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে শুক্রবার (৫ মে) আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির কার্যালয়ে নেতাদের করোনা টেস্ট করানো হয়েছে। যাদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে, তারাই কেবল সভায় অংশ নিতে পারবেন।
ইতোমধ্যে সভার আলোচ্যসূচিসহ দাওয়াতপত্র নেতাদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। সভার আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে শোকপ্রস্তাব পাঠ, ১৭ মে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ও ১১ জুন কারামুক্তি দিবস, ২৫ মে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী, ৭ জুন ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস, ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, ৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, সমসাময়িক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়, সাংগঠনিক ও বিবিধ।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, করোনা কাটিয়ে বড় পরিসরে এই প্রথম কার্যনির্বাহী সংসদের সভা হচ্ছে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, দলের আসন্ন জাতীয় সম্মেলন ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীসহ নানা কারণে এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এতে দলের আসন্ন সম্মেলন কবে হবে, সেই বিষয়ে আলোচনা হবে। জেলা-উপজেলা শাখাগুলোর সম্মেলন হয়েছে কি না, সাংগঠনিক সম্পাদকদের কাছ থেকে এ রিপোর্ট নেবেন দলীয় সভাপতি। এ বিষয়ে নানা দিকনির্দেশনাও দেবেন। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য মাঠের প্রস্তুতি এবং যেসব জেলায় দলীয় কোন্দল বা অভ্যন্তরীণ সমস্যা আছে, সেগুলো সমাধানেও কথা বলবেন। এছাড়া বিভিন্ন জেলা শাখার নেতাদের অব্যাহতি ও বহিষ্কারের সুপারিশের বিষয়েও সিদ্ধান্ত হবে।
তারা বলছেন, ইতোমধ্যেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে- এমন সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলন আয়োজনের বিষয়েও কথা হবে এ বৈঠকে। সংগঠনগুলোর বিভিন্ন ইতিবাচক ও নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা উঠতে পারে। আগামী কয়কমাসে বেশ কিছু দিবস আছে, সেগুলোর কর্মসূচি ঠিক করা হবে। পাশাপাশি কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনসহ বেশ কিছু স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে। কুসিক নির্বাচনের জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সমন্বয় টিমও গঠন হতে পারে সভায়।
দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, ইতোমধ্যে সভার সময়সূচি ও এজেন্ডা চূড়ান্ত হয়েছে। এতে মোট ১২টা এজেন্ডা থাকবে। এরমধ্যে শোকপ্রস্তাব থেকে শুরু করে বিভিন্ন দিবসের কর্মসূচি নির্ধারণের বিষয়গুলো আছে। আগামী সম্মেলন নিয়ে আলোচনা হবে। রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বর এ কমিটির মেয়াদ শেষ হবে। আওয়ামী লীগের রীতি অনুযায়ী ডিসেম্বরে নতুন সম্মেলন হবে।
দলের সাধারণ সম্পাদকের এ বক্তব্য উদ্বৃত করে দলের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্মেলনের তারিখ বলে দিয়েছেন। তিনি তো আমাদের পার্টির মুখপাত্র। আমাদের দলের সভানেত্রীও অতি দ্রুত ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা শাখাগুলোর সম্মেলন করার নির্দেশনা দিয়েছেন। এগুলো তো আমাদের সম্মেলনের সিমটম। সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন নিয়েও সিদ্ধান্ত আসবে বলেও জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র এ নেতা।