নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও এলাকার আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে এক যুবলীগ কর্মীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চর মল্লিকপুর গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত পলাশ মাহমুদ (২৯) উপজেলার চরমল্লিকপুর গ্রামের খোকন শেখের ছেলে। তিনি লোহাগড়া উপজেলা যুবলীগের একজন কর্মী ছিলেন। নিহত পলাশের ২০ দিন বয়সী একটি শিশুসন্তান রয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ করেছে উপজেলা যুবলীগ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত ৯টার দিকে নিহত পলাশ মাহমুদ চরমল্লিকপুর গ্রামের আজিম শেখের ছেলে রুবেলের নিমন্ত্রণে বন্ধু সুরবান, আলিমুল, ইনামুল, সাঈদীকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে ওই গ্রামের ইমরানের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যান।
একপর্যায়ে খাওয়া চলাকালে ১০-১৫ জনের একদল দুর্বৃত্ত কৌশলে পলাশকে ডেকে পার্শ্ববর্তী ইমরানের মুদি দোকানের সামনে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মুখ, মাথা, ঘাড় ও পাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আসন্ন মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে ওই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান সমর্থিত লোকজনদের সঙ্গে চর মল্লিকপুর গ্রামের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী ফরিদ শেখ সমর্থিত লোকজনদের মধ্যে সংঘাত চলে আসছিল। এর জের ধরে ফরিদ সমর্থিত পলাশ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে এলাকাবাসীর ধারণা।
মঙ্গলবার দুপুরে নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে নিহতের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে বিকালে জানাজা শেষে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে যুবলীগ কর্মী পলাশ মাহমুদ হত্যার প্রতিবাদ, হত্যাকারীদের আটক ও ফাঁসির দাবিতে লোহাগড়া উপজেলা যুবলীগের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল থানা মোড় থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
লোহাগড়া থানার ওসি শেখ আবু হেনা মিলন জানান, এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও আটক করার জোর চেষ্টা চলছে। ওই গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নড়াইলের পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তানজিলা সিদ্দিকা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।