সেপ্টেম্বর এলেই অস্তিরতা দেখা দেয় দেশের পেঁয়াজের বাজারে। গত বছরও প্রায় একই সময়ে ভারত রপ্তানি বন্ধ করার মাসখানেকের মাথায় দাম বেড়ে ৩০০ টাকা কেজিতে গিয়ে ঠেকে। এ বছরও সেই সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে এসে গত সোমবার নিত্যপণ্যটির রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয় ভারত। রাতারাতি পেঁয়াজের ঝাঁজে অস্থির হয়ে পড়ে বাজার। একদিনের ব্যবধানে দাম বেড়ে হয় দ্বিগুণ।
সোমবার খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ বুধবার তা কিনতে হচ্ছে ১৩০ টাকায়। এছাড়া ৬০ টাকার আমদানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রি হয় ১০০ টাকা কেজি দরে। এদিকে, ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার আগেই বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজ আনার উদ্যোগ নিয়েছেন আমদানিকারকরা। গত ১৩ দিনে ছয়টি দেশ থেকে ৪০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে ‘প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টাইন’ তথা ‘উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র’। আইপি ইস্যু হয়েছে ১০১টি।
চীন, মিয়ানমার, পাকিস্তান, মিশর, তুরস্ক, নেদারল্যান্ড এই ছয়টি দেশ থেকে পেঁয়াজ আমাদানির জন্য এলসি খোলেন আমদানিকারকরা। পাইপলাইনে থাকা এসব চালান আগামী সপ্তাহ থেকে বাজারে ঢুকতে শুরু করবে বলে দাবি আমদানিকারকদের।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে আমদানি চাহিদার ৯০ শতাংশের বেশি পেঁয়াজ আসে ভারত থেকে। ফলে প্রতিবেশী দেশটি রপ্তানি বন্ধ করায় বাজারে কিছুটা প্রভাব পড়বেই। কিন্তু ব্যবসায়ীরা যেভাবে অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়াচ্ছেন সেটি কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। গত বছরের মতো পরিস্থিতি যেন এবার তৈরি না হয়, তার জন্য যা যা করা দরকার সরকারকে এখনই করা উচিত।
‘প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টাইন’ এর চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর শাখার তথ্যমতে, ভারত রপ্তানি বন্ধ করে আগেই অর্থাৎ গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নিতে শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। গেল ১৩ দিনে প্রায় ৩৯ হাজার ৯১৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে ২৫টি প্রতিষ্ঠান। মঙ্গলবার একদিনেই প্রায় ৩ হাজার ৮১২ হাজার টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সংস্থাটি।
সরকারি হিসাবে, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২৪ লাখ টন। এর মধ্যে ৭ থেকে ৮ লাখ টন ঘাটতি পোষানো হয় বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে। উদ্ভিদজাত যেকোনো পণ্য আমদানির আগে অনুমতি নিতে হয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ‘প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টাইন’ থেকে। দেশজুড়ে যার রয়েছে ৩০টি শাখা। পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের সংগঠনের তথ্য মতে, গেল কয়েকদিনে চট্টগ্রামের অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন ব্যবসায়ী পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছেন। অন্যদেরও উৎসাহিত করা হচ্ছে।