আজ - রবিবার, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - রাত ১১:৩১

চুড়ামনকাঠি দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি মামলা নথিভুক্ত।

 ২৬ জানুয়ারি চুড়ামনকাটি ইউনিয়নে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বর্তমান ও সাবেক দুই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালতে দায়েরকরা মামলা কোতয়ালি থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়েছে।

আদালতের নির্দেশে গত সোমবার সকালে থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা রেকর্ড করা হয়। তবে, আলাদা দুই মামলার কোন আসামি আটক হয়নি।

যশোর সদরের চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যন দাউদ হোসেনের দায়ের করা মামলা আসামি হলো সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মুন্নাসহ ২৮ জন।

অন্য আসামিরা হলেন, আব্দুল মান্নান মুন্নার ছেলে ছাতিয়ানতলা গ্রামের বাসিন্দা আওয়াল হোসেন, ভাই আব্দুল হান্নান, হুমার হোসেনের ছেলে হিমেল, আসাব আলীর ছেলে মোজাম উদ্দিন, হোসেন আলী ও হাসান আলী, আলী বক্স মন্ডলের ছেলে মহিদুল ইসলাম, হেদায়েত উদ্দিন মন্ডলের ছেলে আক্তার হোসেন, চুড়ামনকাটি গ্রামের আসকার কবিরাজের ছেলে ইছাহাক আলী, পুকুর বাগডাঙ্গা গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম, আসাফ আলী সরদারের ছেলে ইউনুছ আলী, হযরত আলীর ছেলে কোরবান আলী, বাগডাঙ্গা বিশ্বাসপাড়ার আব্দুল মুজিদের ছেলে মনিরুল ইসলাম, বাগডাঙ্গা পালপাড়ার মৃত আক্কারে পালের ছেলে অতুল পাল, বাগডাঙ্গা গ্রামের মোজে মোল্লার ছেলে আব্দুল মুজিদ, সাজিয়ালী গ্রামের মৃত ইমান আলীর ছেলে হযরত আলী, চুড়ামনকাটি দাসপাড়ার অজিত দাসের ছেলে অসীম দাস, আব্দুলপুর গ্রামের গোপাল গোসাইয়ের ছেলে তপন দাস, রাম দাস, জিতেন দাসের ছেলে উত্তম দাস, দুলাল দাসের ছেলে রতন দাস, গোপাল দাসের ছেলে ভরত দাস, কার্তিক দাসের ছেলে দুধু চান, তপন দাসের ছেলে সুমন দাস, মৃত গোলাম বিশ্বাসের ছেলে আমির হামজা, বদর উদ্দিন মন্ডলের ছেলে আবুল হোসেন মন্ডল ও মনসের মল্লিকের ছেলে মহাসীন আলী।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৬ জানুয়ারি বিকেলে ধারালো অস্ত্র, কাঠ ও বাঁশের লাঠি নিয়ে ছাতিয়ানতলায় মুন্নার বাড়ির ভেতর আসামিরা অবস্থান নেন। ওই সময় মুন্নার বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন দাউদের সমর্থক সেলিম। তাকে দেখামাত্রই মুন্নার নির্দেশে অন্য আসামিরা সেলিমের ওপর আক্রমণ করেন। তারা তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। পরে মুন্নাসহ অন্যরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে হামলার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে চুড়ামনকাটি বাজারের মসজিদের সামনে দাউদের আরো দুই সহোদর সমর্থক হাফিজুর ও ইনছানকে দেখতে পেয়ে তাদের ওপর আক্রমণ করেন তারা। এ সময় হামলাকারীরা জিআই পাইপ ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই সহোদরকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেন। এছাড়া হাফিজুর ও ইনছানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে ক্যাশবাক্স ভেঙে প্রায় দেড় লাখ টাকা লুট করে হামলাকারীরা। এরপর মুন্নার নেতৃত্বে অন্য আসামিরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে হামলা চালান। তারা ইট নিক্ষেপ করলে দরজা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

অন্যদিকে, মুন্নার দায়ের করা মামলার আসামি হলো চুড়ামনকাটির ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান দাউদ হোসেনসহ ১৭ জন।

অন্য আসামিরা হলো, চেয়ারম্যান দাউদ হোসেনের তিন ছেলে তানভির হাসান রক্সি, জাকির হোসেন ও রাসেল, আবুল হোসেনের ছেলে টিপু, মোংলার ছেলে টিপু, শহিদ ড্রাইভারের ছেলে সুমন, আনতার দফাদারের তিন ছেলে আশরাফ, হাফিজুর ও ইনছার আলী, মৃত বারিক দফাদরের দুই ছেলে দিপু ও লিপু, বাগডাঙ্গা গ্রামের মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে আমিরুল, আব্দুলপুর গ্রামের আব্বাস মন্ডলের ছেলে আনিচ, আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দল আলিম, ক্ষিতিবদিয়া গ্রামের মৃত রওশন আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক ও লাল্টুর ছেলে হাফিজুর।

মামলার এজাহারে  উল্লেখ করা হয়,  আব্দুল মান্নান মুন্না গত ইউপি নির্বাচনে পরাজয় বরণ করেছেন। সাজিয়ালি গ্রামের হযরত আলী তার পক্ষে নির্বাচন করায় চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয় বর্তমান চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন ও তার অনুসারীরা। গত ১৪ জানুয়ারি পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হযরত আলীকে একা পেয়ে চেয়ারম্যান দাউদ হোসেনের নির্দেশে আসামিরা মারপিট করে গুরুতর জখম করে। এ সময় আসামিরা হযরত আলীর কাছে থাকা ৫ লাখ টাকা ও ২২ হাজার টাকা দামের একটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। হযরত আলী চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে ২৬ জানুয়ারি আব্দুল মান্নান মুন্নার বাড়ি যান। এ সময় তারা বাড়ির সামনে রেললাইনের পাশে বসে কথাবার্তা বলছিলেন। এর মধ্যে আসামিরা হামলা করে মুন্না ও হযরত আলীকে বেদম মারপিট ও কাছে থাকা একটি মোবাইল ফোন ভাঙচুর করে। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা চলে যান। স্থানীয়ভাবে মীমাংসায় ব্যর্থ হয়ে তিনি আদালতে মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালি থানার ইন্সপেক্টর বিএম আলমগীর হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনো কাউকেই আটক করা হয়নি ।

আরো সংবাদ