দৃষ্টিনন্দন ৬ লেনের মধুমতি সেতু চালুর প্রথম ৭ দিনে ২৫ হাজার ৫৮৭ টি যানবাহন পারপার হয়েছে । এসব যানবাহন থেকে টোল আদায় হয়েছে ২৩ লাখ ৩৪ হাজার ২৫০ টাকা।
গত ১০ অক্টোবর সোমবার রাত ১২টা ১ মিনিটি থেকে গাড়ি চলাচল শুরু হয় এ সেতুতে। প্রথম দিনে ১১ অক্টোবর ৩ হাজার ৫৭৬ টি গাড়ি পার হয়। এখান থেকে ৪ লাখ ১৪ হাজার ১৫৫ টাকা টোল আদায় হয়েছে । ১২ অক্টোবর ৩ হাজার ৫৫৪টি গাড়ি পারাপর হয়। এখান থেকে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ২২৫ টাকা টোল এসেছে। ১৩ অক্টোবর ১ হাজার ৯৯১ টি যানবাহন পারপার করে ২ লাখ ২৮ হাজার ৮২০ টাকার টোল কালেকশন হয়েছে। ১৪ অক্টোবর ৫ হাজার ৪৬৩ টি যানবাহন পার হয়। এখান থেকে টোল আসে ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৯০ টাকা। ১৫ অক্টোবর ৪ হাজার ৪০ টি গাড়ি পার হয়। এখান থেকে টোল সংগৃহিত হয় ৩ লাখ ৩ হাজার ৬০০ টাকা। ১৬ অক্টোবর ৩ হাজার ১০৪ টি গাড়ি পারের বিপরীতে ২ লাখ ৮২ হাজার ৯৫০ টাকার টোল আদায় হয়। ১৭ অক্টোবর ৩ হাজার ৮৫৯টি গাড়ি পারপার হলে ৩ লাখ ১৩ হাজার ৪১০ টাকার টোল আদায় হয়েছে। নিয়ে গত ৭ দিনে মোট ২৫ হাজার ৫৮৭ টি যানবাহন পারপারে ২৩ লাখ ৩৪ হাজার ২৫০ টাকার টোল আদায় হয়েছে।
গাড়ি চলাচল ও টোল আদায়ের ওই তথ্য আজ বুধবার সকালে নিশ্চিত করেছেন গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন,টোল আদায় ব্যবস্থাকে এখনো ইজারা দেওয়া হয়নি। গোপালগঞ্জ সওজের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টোল আদায় করছেন। টোলের কম্পিউটারাইজ রশিদ দেওয়া হচ্ছে।
গত ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর কার্যালয় থেকে ভিডিওকনফারেন্সের মাধ্যমে মধুমতি নদীর কালনা পয়েন্টে সেতুর উদ্বোধন করেন। এটি স্থানীয়দের কাছে কালনা সেতু নামে পরিচিত। এরপর সোমবার রাত ১২টার পর থেকে এ সেতুতে গাড়ি চলাচল শুরু হয়।
মধুমতি সেতুর পূর্ব পাড়ে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা এবং পশ্চিম পাড়ে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা। কিন্তু এ সেতুটি গোপালগঞ্জ জেলা সীমানর মধ্যে পড়েছে। তাই টোলপ্লাজা গোপালগঞ্জ অংশে স্থাপন করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ এটি নিয়ন্ত্রণ করছে।
এ দিকে সেতু চালু হওয়ার আগে ইজিবাইক, সিএনজি ও টেম্পো, তথা তিন চাকার যান কালনা ঘাট থেকে লোহাগড়া ও নড়াইলে যাতায়াত করত। ওই যানগুলো এখন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া মোড় থেকে লোহাগড়া ও নড়াইল যাতায়াত করছে। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমেছে।
সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে টোল হার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কন্টেইনার বা ভারী মালামাল পরিবহনে সক্ষম যানের টোল ধরা হয়েছে ৫৬৫ টাকা, বড় ট্রাক বা কাভার্ড ভ্যান ৪৫০ টাকা, মধ্যম ট্রাক ২২৫ টাকা, বড় বাস ২০৫ টাকা, ছোট ট্রাক ১৭০ টাকা, পাওয়ার টিলার বা ট্রাক্টর ১৩৫ টাকা, মিনিবাস বা কোস্টার ১১৫ টাকা, মাইক্রোবাস বা পিকআপ ৯০ টাকা, সিডান কার ৫৫ টাকা, টেম্পো বা সিএনজি অটোরিকশা ২৫ টাকা, মোটরসাইকেল ১০ টাকা এবং ভ্যান, রিকশা বা বাইসাইকেল ৫ টাকা নির্ধারণ করেছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় নির্ধারিত টোল এ সেতুতে আদায় করা হচ্ছে।
সেতু কর্র্তপক্ষ জানায়, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে ৯৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে জাপানি ও বাংলাদেশি ঠিকাদারেরা যৌথভাবে সেতুটি তৈরি করেছেন। সেতুর দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার ও প্রস্থ ২৭ দশমিক ১০ মিটার।
গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন বলেন, এ রুটে পুরোদমে এখনো গাড়ি চলাচল শুরু হয়নি। ভোমরা, বেনাপোল পোর্ট ব্যবহারকারীরা অচিরেই এইরুট বেছে নেবেন। এছাড়া ঢাকা-বেনাপোল, ঢাকা-যশোর সহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার পরিবহন চলাচল পুরোপরি শুরু হলে এ সেতুতে টোল আদায়ের হার আরো বৃদ্ধি পাবে। আমরা আমাদের লোকবল দিয়ে কিছু দিন টোল কালেকশন করব। তারপর টোল আদায়ের গড় হিসাব করে দেখা হবে। বিষয়টি পর্যালোচনা করে মধুমতি সেতুর টোল আদায়ে ইজারাদার নিয়োগ দেওয়া হবে। টোল কালেকশন সিস্টেম কম্পিউটারাইজ করা হয়েছে। তাই এখান থেকে শতভাগ টোল আদায় করা সম্ভব হবে।