আজ - শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - সকাল ৭:৪৯

শ্যামনগরে ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন : আতংকিত মানুষ

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১/২ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পশ্চিম দূর্গাবাটি ও দাতিনাখালীর পাউবো ভেড়িবাঁধ জোয়ারে আনুমানিক ১৫০ ফুট বসে গেছে। দূর্গাবটিতে নদীর পানি ভিতরে প্রবেশ করে।

স্থানীয় চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল ও জেলা পরিষদের সদস্য ডালিম ঘোরামী ২শতাধিক লোক নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে দূর্গাবাটি বেড়ীবাধে মাটি ভর্তি বস্তা ফেলে কোন রকমে রক্ষা করেন। শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান সংশ্লিষ্ট এসও শাহনেওয়াজ পারভীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। চেয়ারম্যান এস এম আতাউল হক বলেন, খবর পেয়ে আমি শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডিকে বিষয়টি জানিয়েছি। তারা ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন এলাকায় জিও বস্তা পাঠিয়েছে। তিনি আরও বলেন, পশ্চিম দূর্গাবাটির দুই স্থানে দাতিনাখালী আজিজ ম্যানেজার এর বাড়ীর সামনে সকালের জোয়ারে হঠাৎ বেড়ীবাধ বসে গেছে।

তবে দূর্গাবাটির সাবেক মেম্বর নীলকান্ত রপ্তান এর বাড়ীর সামনে নদীর পানি ভিতরে প্রবেশ করে। সেখানে স্বেচ্ছা শ্রমের মাধ্যমে লেবারে কাজ করছে। তবে ভাটার সময় ওই এলাকার বেড়ীবাঁধ আরও মারাত্মক হতে পারে। লেবারদের খাবারের ব্যবস্থা ও রাতে লাইটের ব্যবস্থা করে এসেছি। যাতে তারা রাতেও সেখানে কাজ করতে পারে। এছাড়া বাড়ী দুই স্থানে দ্রুত কাজ করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছি। সেখানে তারা কাজ করবে। শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট এসও শাহনেওয়াজ পারভীন জানান, আমি ও এসডি স্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। দূর্গাবাটিতে ১০০ জিও বস্তা পাঠানো হয়েছে। সেখানে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে কাজ চলছে। প্রতি বারের ন্যায় যেভাবে টাকা দেওয়া হয় সেভাবে তাদের টাকা দেওয়া হবে। এলাকাবাসী জানান, যখন কোন জলোচ্ছাসের ঘটনাঘটে যেমন, আইলা, সিডর, বুলবুল ও আম্পানের সময় সুন্দরবন এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে যায়। বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে জান মালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।

তখন সরকারের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রীরা ও উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। তখন তারা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষে আশ্বস্ত করেন দ্রুত নতুন ডিজাইনে টেকসই বেড়ীবাঁধের কাজ হবে। অথচ একের পর এক জলোচ্ছাসের ঘটনা ঘটে গেলেও আজও বেড়ীবাঁধ পূর্বের ন্যায় রয়ে গেছে। শুধুমাত্র পানি উন্নয়ন বোর্ডের সদস্যরা বেড়ীবাঁধ সংস্কারের নামে কিছু কাজ করলেও কাঁজটি বছর যেতে না যেতে তা নদীগর্ভে চলে যায়। যার কারণে আমরা উপকূলীয় মানুষ আতংকের মধ্যে বসবাস করছি। তারা আরও জানান, দূর্গাবাটির দুই স্থান ও দাতিনাখালীতে বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে গেলে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের সব কয়টি গ্রাম, আটুলিয়া, শ্যামনগর সদর ও কাশিমাড়ীর কয়েকটি গ্রাম নদীর পানিতে হাবু ডুবু খাবে।

হাজার হাজার মৎস্যঘের, কাঁকড়ার হ্যাচারী, আমন ধান সহ জানামালের ব্যাপক ক্ষতি হবে। ভয়াবহ ভাঙ্গনকুল দ্রুত সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শ্যামনগরের সুধী মহল।

আরো সংবাদ