সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় একই পরিবারের ৪ জনকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) ভোরে খবর পেয়ে উপজেলার খলিশা গ্রাম থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার রাত বা আজ বৃহস্পতিবার ভোরের কোনো এক সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কলারোয়া থানার ওসি হারান পাল ও জেলার অতিরক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মির্জা সালাউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কারা কেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ধারণা দিতে পারেনি পুলিশ।
নিহতরা হলেন- খলসি গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩০), ছেলে সিয়াম হোসেন মাহি (৯) ও মেয়ে তাসনিম (৬)। ওই দম্পতির ৫মাস বয়সী শিশু কন্যা মারিয়াও ওই ঘরে ছিল, তবে সে বেঁচে গেছে।
জেলার অতিরক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মির্জা সালাউদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে হেলাতলা ইউনিয়নের খলসি গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
অতিরক্ত পুলিশ সুপার জানান, শাহিনুরের ছোট ভাই রায়হানুল ইসলাম ভোরের দিকে গোঙানোর শব্দ পান। “পরে তিনি উঠে গিয়ে দেখেন শাহিনুরের ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকানো। ভেতরে রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে।”
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারান পাল জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে হেলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন পুলিশকে খবর দেন। তিনি জানান, ইউনিয়ন পরিষদের পাশের এক বাড়িতে রাতে ডাকাতি হয়েছে। ডাকাতেরা একই পরিবারের চার সদস্যকে হত্যা করেছে। এ খবর পেয়ে তিনি (ওসি) কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলে যান।
ওসি হারান পাল বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চারজনের লাশ দেখতে পায়। চারজনকেই কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, বাড়ি থেকে কোনো জিনিসপত্র খোয়া যায়নি।
ওসি হারান পাল বলেন, কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, কারা এই ঘটনা ঘটাল, তা প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ডাকাতি করার জন্য নয়, পরিকল্পিতভাবেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
শাহিনুরের ঘরের পাশেই আরেক ঘরে থাকেন ছোট ভাই রায়হানুল ইসলাম। তিনি জানান, তাদের মাও বড় ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে একই বাসায় থাকতেন। তবে বুধবার তিনি এক আত্মীয়র বাড়িতে গিয়েছিলেন।
ভোরে পাশের ঘর থেকে বাচ্চাদের গোঙানির শব্দ শুনতে পাই। দরজা খুলে দেখেন, ভেতরে ভাই-ভাবির রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে। কিছুক্ষণ পর বাচ্চারাও মারা যায়।
তিনি আরও জানান, তাদের সঙ্গে জায়গা-জমি নিয়ে কিছু লোকের বিরোধ ছিল। কিন্তু কারা এ ঘটনা ঘটালো তা বুঝতে পারছি না।
কলারোয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মফিজুল ঘটনাস্থল থেকে জানান, নিজেদের ঘরের মধ্যে শাহিনুর রহমানসহ চারজনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এদের মধ্যে শাহিনুরের পা বাঁধা ছিল এবং তাদের চিলেকোঠার দরজা খোলা ছিল।
মফিজুল আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে ছাদের চিলেকোঠার দরজা দিয়ে হত্যাকারীরা ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে। ঘটনার রহস্য উন্মোচনে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।