আজ - শনিবার, ১১ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - রাত ১২:১৩

সেক্টর কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরী আর নেই

ঢাকার সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে তার মৃত্যু ঘটে বলে জানিয়েছেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবীব।মুক্তিযুদ্ধকালীন ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরীর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। এনিয়ে গত ১১ দিনে দুজন সেক্টর কমান্ডারের জীবনাবসান ঘটল। গত ২৫ অগাস্ট মৃত্যু হয়েছিল ৪ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার সি আর দত্তের। আবু ওসমান চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।। স্মৃতিশক্তিও ক্রমে লোপ পাচ্ছিল তার। এক সপ্তাহ আগে অসুস্থ অবস্থায় তাকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষার পর তার করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল। এর মধ্যে তার ব্রেন টিউমারও ধরা পড়ে। সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল ইসলাম জেমস বলেন, শনিবার বাদ আসর সেনানিবাসে সেনাকুঞ্জের পাশে সেন্ট্রাল মসজিদে আবু ওসমান চৌধুরীর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বনানী সামরিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

আবু ওসমান চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরও শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। স্বাধীনতা পুরস্কার জয়ী আবু ওসমান চৌধুরী চাঁদপুর জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক। মুক্তিযুদ্ধকালীন ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার আবু ওসমান চাঁদপুর জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক। তিনি স্বাধীনতা পদকে ভূষিত।

১৯৩৬ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মদনেরগাঁও গ্রামে জন্ম হয় আবু ওসমান চৌধুরীর। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে বিএ পাস করার পর ১৯৫৮ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন পান। ১৯৬৮ সালের এপ্রিল মাসে তিনি পদোন্নতি পেয়ে মেজর হন। একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে যখন ঢাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞ অপারেশন সার্চ লাইট শুরু হয়, সেই খবর আবু ওসমান পান কুষ্টিয়া সার্কিট হাউজে বসে। সে সময় তিনি ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের চতুর্থ উইংয়ের কমান্ডার হিসেবে চুয়াডাঙ্গার দায়িত্বে। পরদিন সকালে তিনি কুষ্টিয়া থেকে চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছান এবং বিদ্রোহ ঘোষণা করে একদল সৈনিককে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। পরে তাকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধের ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হলে আবু ওসমান চৌধুরী এক প্লাটুন সৈন্য নিয়ে মন্ত্রিপরিষদকে গার্ড অব অনার দেন।

তার স্ত্রী নাজিয়া খানমও সে সময় রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারকে খাবার ও পানীয়, টাকাপয়সা পৌঁছে দেওয়া এবং প্রয়োজনে ওষুধপত্রের ব্যবস্থা করা, অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ পাহারা দেওয়ার মতো কাজ করেছেন সাহসিকতার সঙ্গে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবু ওসমান চৌধুরীকে লেফটেনেন্ট কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়, বঙ্গবন্ধু তাকে আর্মি সার্ভিস কোরের (এএসসি) পরিচালকের দায়িত্ব দেন।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত