নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের ওপর হামলার ঘটনায় বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাসহ ৯৭ জনের নামে আদালতে মামলার আবেদন ফেরত দিয়েছেন আদালত।
মামলাটি আমলে নেওয়ার এখতিয়ার না থাকার কথা উল্লেখ করে আদালত আবেদনটি ফেরত দিয়েছেন এবং বাদীকে আবেদনটি দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে দায়ের করার পরামর্শ দিয়েছেন।
আজ সোমবার বিকেলে নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৪ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মোসলেহ উদ্দিন মিজান বাদীর আবেদনের ওপর শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এর আগে দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খানের স্ত্রী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আরজুমান পারভীন বাদী হয়ে ওই আদালতে মামলার আবেদন করেছিলেন।
আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীর আইনজীবী হারুনুর রশীদ হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের পরামর্শ অনুযায়ী মঙ্গলবার তাঁরা জেলার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে আবেদনটি দাখিল করবেন।
বাদীর অভিযোগে আবদুল কাদের মির্জা ছাড়াও তাঁর ছোট ভাই শাহাদাৎ হোসেন ও কাদের মির্জার ছেলে মির্জা মাশরুর কাদের তাসিককে আসামি করা হয়েছিল। এ ছাড়া আসামি দেখানো হয়েছিল অজ্ঞাতনামা আরও ৫০-৬০ জনকে।
এর আগে গতকাল রোববার বেলা ১টার দিকে একই আদালতে আবদুল কাদের মির্জাসহ ১৬৪ জনের নামে হত্যা মামলার আবেদন করা হয়। দুই পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে আলাউদ্দিন নিহত হওয়ার ঘটনায় তাঁর ছোট ভাই এমদাদ হোসেন ওরফে রাজু মামলার আবেদনটি করেন। আদালত শুনানি শেষে ওই ঘটনায় ইতিমধ্যে কোম্পানীগঞ্জ থানায় কোনো মামলা হয়েছে কি না, তা জানতে চেয়ে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
৮ মার্চ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাটে জিরো পয়েন্ট এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের ওপর কাদের মির্জার নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই হামলায় আহত খিজির হায়াত বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
৯ মার্চ রাত সাড়ে ৯টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌর ভবন এলাকায় মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনায় মিজানুর রহমানের অনুসারী সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক ও শ্রমিক লীগের চর ফকিরা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি (সাবেক যুবলীগ কর্মী) আলাউদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন আরও কমপক্ষে ২০ জন।
এদিকে ৩১ ডিসেম্বর থেকে সরকার, নির্বাচন, দলের নেতা ও সাংসদদের বিরুদ্ধে নানা ‘সত্য বচনে’ আলোচনায় আসেন সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা। পরে ১৯ ফেব্রুয়ারি কোম্পানীগঞ্জের চাপরাশিরহাট বাজারে আবদুল কাদের মির্জা ও মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এতে গুলিবিদ্ধ হন সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে তিনি মারা যান।