আজ - রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সকাল ৭:৪৫

নুসরাত ও তার স্বামী গ্রেপ্তার হতে পারেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিভিন্ন প্রতারণা, জালিয়াতি, ভুল তথ্য দিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হতে পারেন নুসরাত ও তার স্বামী। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা খুব শীগগিরই তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে যাচ্ছে এবং এই জিজ্ঞাসাবাদে যদি তাদের বক্তব্য সন্তোষজনক না হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং আইনগত ব্যবস্থায় তারা গ্রেপ্তার হতে পারেন। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

উল গত ২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে মারা যান মুনিয়া। মুনিয়ার মৃত্যুর পর পরই তার বড় বোন নুসরাত তানিয়া গুলশান থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় তিনি যে সমস্ত অভিযোগগুলো উত্থাপন করেছিলেন পরবর্তীতে দেখা গেছে যে, এই সমস্ত একাধিক অভিযোগগুলো একেবারে মিথ্যা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, নুসরাতের যে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা সেই আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলায় পাঁচটি মোটাদাগে প্রতারণা, জালিয়াতি এবং মিথ্যা তথ্য দেয়া হয়েছে।

১. আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা: মুনিয়ার মৃত্যুর পর তার মরদেহ নেয়া এবং থানায় মামলা করা এক্ষেত্রে নুসরাত এবং তার স্বামী প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন। কারণ তারা আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেছেন অথচ এটি আত্মহত্যা কিনা সেটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য ময়নাতদন্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। ময়নাতদন্তের আগেই এক রকম জোর করে এই মামলাটি করা হয়েছে। এটি প্রতারণামূলক।

২. ভুল তথ্য: মুনিয়ার সঙ্গে বিভিন্ন ব্যক্তির সম্পর্ক নিয়ে নুসরাত ভুল তথ্য দিয়েছেন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মুনিয়া সঙ্গে একাধিক ব্যক্তির সম্পর্ক ছিল এবং একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করার ক্ষেত্রে নুসরাত বড় ভূমিকা রেখেছিলেন। কিন্তু মুনিয়ার মৃত্যুর পর নুসরাত তানিয়া এমন একটি আবহ তৈরি করে যে, একজন ব্যক্তির সঙ্গেই সম্পর্ক ছিল। এছাড়াও মুনিয়ার যে সমস্ত ডায়েরি, মোবাইলে মেসেজ আদান প্রদানের যে আলামতগুলো পুলিশকে নুসরাত এবং তার স্বামী দিয়েছিল তার আংশিক খন্ডিত এবং ভুল।

৩. প্রতারণা: মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে করা মামলায় নুসরাত তানিয়া প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। বিশেষ করে মুনিয়ার সঙ্গে অন্য ব্যক্তির কথোপকথনকে তিনি টেম্পারড করে বা পরিবর্তন করে একজন বিশেষ ব্যক্তির নামে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এবং অনেক ক্ষেত্রে অডিও এডিটিং বা সম্পাদনা করা হয়েছে এমন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

৪. জালিয়াতি: মুনিয়ার মৃত্যুর পর এই মামলা করতে যেয়ে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন নুসরাত তানিয়া এবং এই মামলা তদন্তে তার জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। মুনিয়াকে যে বাড়িটি ভাড়া দেওয়া হয়েছিল সেই বাড়িটি ভাড়া দেওয়া হয়েছিল নুসরাত এবং তার স্বামীর নামে। অথচ এই বাড়িতে তারা থাকতেন না। এটি বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী এক ধরনের জালিয়াতি। আর এরকম জালিয়াতির কারণে এই বাড়িতে সংঘটিত যে কোনো ঘটনার দায়-দায়িত্ব তাদের ওপরই বর্তায়। এরকম বহু জালিয়াতির তথ্য-প্রমাণ এখন পাওয়া যাচ্ছে।

৫. পুলিশকে হুমকি প্রদান: নুসরাত স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন ভূইফোঁড় অনলাইন প্লাটফর্ম যেগুলো বিদেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে সেগুলোতে সাক্ষ্মাৎকার দিয়ে পুলিশকে হুমকি প্রদান করছেন এবং ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন। এটি নিরপেক্ষ তদন্তের যেমন অন্তরায় তেমনি আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার মতো অপরাধও বটে।

আর এই সমস্ত কারণেই এখন নুসরাত এবং তার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হচ্ছে এবং এই জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরেই গ্রেপ্তার হয়ে যেতে পারেন নুসরাত ও তার স্বামী।

আরো সংবাদ