মেডিকেল কলেজের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) কর্তৃক চিহ্নিত ৪৪ জনের ১৪ জনই চিকিৎসক ও দুজন মেডিকেল শিক্ষার্থী। যারা গত পাঁচ বছরে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে প্রায় ৯৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এই ৪৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সিআইডি।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় তদন্ত তদারক কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, মামলার তদন্তের প্রয়োজনীয় প্রায় সবকিছুই গুছিয়ে এনেছি। এখন শেষ মুহূর্তের যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। শিগগিরই আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।
জানা যায়, প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রের মূল হোতা তৎকালীন মেশিনম্যান আবদুস সালাম খান। ১৯৮৮ সালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর প্রিন্টিং প্রেসে মেশিনম্যানের (চতুর্থ শ্রেণি) চাকরি পান তিনি। ব্যুরোর প্রিন্টিং প্রেস থেকে ২০০৬, ২০০৯, ২০১১, ২০১৩ ও ২০১৫ সালের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন সালাম খানের নিয়ন্ত্রণাধীন ৪৪ জন সদস্যের একটি চক্র। প্রেসের ফাঁস করা প্রশ্ন সালাম ও তার খালাতো ভাই জসীম বিভিন্ন কোচিং সেন্টার এবং নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতেন।
সিআইডির অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, পারস্পরিক যোগাযোগের মাধ্যমে ডেন্টাল ও মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করতেন তারা। এভাবে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও শত শত শিক্ষার্থী টাকার বিনিময়ে মেডিকেলে ভর্তি হয়ে ইতোমধ্যে চিকিৎসক হয়ে গেছেন।
সিআইডি জানায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে মোট ছয়টি দলিলে ২.৫২৫ একর জমি কিনেছেন সালাম খান, যার বাজারমূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। এ ছাড়া সালাম তার স্ত্রী নাসরিন আক্তারের নামে মানিকগঞ্জের সিংগাইরে ১২.৬৮ শতাংশ জমি কিনেছেন।
এছাড়াও চক্রের অন্যতম সদস্য সালামের খালাতো ভাই জসিমের রাজধানীর রাজাবাজারে তাদের পাঁচ তলা একটি বাড়ি এবং নড়াইলে বিপুল সম্পদের খোঁজ মিলেছে। তাদের ব্যাংক হিসাবে পাওয়া গেছে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য।
এর আগে, সালামসহ চক্রের ১৪ জনকে আসামি করে ধানমন্ডি থানায় মানি লন্ডারিংয়ের একটি মামলা করেন সহকারী পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা।