সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী অনিক চন্দ্র ব্রহ্মকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। রোববার দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে তাকে খুন করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সুনামগঞ্জে নির্মাণাধীন কালেক্টরেট ভবনের নিচতলা থেকে অজ্ঞাতপরিচয়ের হিসেবে ওই কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর সোমবার সকালে খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করে নিহত কিশোরের পরিবার। অনিক ব্রহ্ম তাহিরপুর উপজেলার তেলিগাঁও গ্রামের প্রদীপ ব্রহ্ম ও অঞ্জনা রানী পালের ছেলে।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, রোববার দুপুর ১টার দিকে সুনামগঞ্জ শহরের পশ্চিম নতুনপাড়া এলাকার বাসা থেকে বের হয় শিক্ষার্থী অনিক। এরপর বিকেল পর্যন্ত সে আর বাসায় ফেরেনি। বাসার লোকজন অনিকের ফিরতে দেরি হওয়ায় প্রথম ভাবেন সে হয়ত দোল উৎসবের কোনো আয়োজনে কোথাও গেছে।
রাতেও না ফেরায় দুশ্চিন্তায় অস্থির হয়ে যান তারা। ভোর থেকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। সকাল ৬টায় খবর পাওয়া যায় পুলিশ রোববার বিকেলে নতুন কোর্ট ভবন থেকে এক তরুণের মরদেহ উদ্ধার করেছে। পরে তারা হাসপাতালে গিয়ে অনিকের বীভৎস মরদেহ দেখেন।
সোমবার দুপুরে অনিকের বাবা প্রদীপ ব্রহ্মসহ পরিবারের সদস্যদের কান্নায় হাসপাতাল কমপ্লেক্সের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। নতুনপাড়ার বাসায় বার বার মুর্ছা যাচ্ছিলেন মা।
প্রদীপ ব্রহ্ম বলেন, আমি চার ছেলেকে পড়াশোনা করানোর জন্য শহরে এসে ভাড়া বাসায় থাকছি। অনিক অত্যন্ত মেধাবী ছিল। সে সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছিল; যেখানে সাধারণত সবাই সুযোগই পায় না ভর্তি হওয়ার।
তিনি বলেন, আমার ছেলে শহরের অলিগলি-রাস্তাঘাটই ভালো করে চিনে না। কারও সঙ্গে তার বা তার ছেলের কোনো বিরোধ নেই। কারা এমন নির্মম ঘটনা ঘটিয়ে আমার সর্বনাশ করে দিলো।
সুনামগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুর রহমান বলেন, রোববার বিকেলে এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। সোমবার তার পরিচয় মিলেছে। সে সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এ হত্যাকাণ্ড কারা ঘটাল, বিষয়টি নিবিরভাবে তদন্ত করছে পুলিশ।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) রফিকুল ইসলাম বলেন, কিশোর অনিকের শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। এরইমধ্যে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।