আজ - সোমবার, ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি, (বসন্তকাল), সময় - রাত ৪:২৬

শবে বরাতের আগেও দাম বাড়লো নিত্যপণ্যের

প্রতি বছর পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে—এটা যেন স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় শবে বরাতের আগে আরেক দফা দাম বাড়লো বিভিন্ন পণ্যের। দাম বাড়ার এ তালিকায় রয়েছে চিনি, আটা, ময়দা ও ব্রয়লার মুরগি।

তবে ভোক্তাদের জন্য স্বস্তির খবর হলো—নতুন করে চালের দাম বাড়েনি। আমদানি বাড়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম কমেছে। কমেছে পেঁয়াজের দামও। শুক্রবার রাজধানীর মহাখালী, কাওরান বাজার ও তুরাগ এলাকার নতুন বাজারে খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দামের এ তথ্য পাওয়া যায়।

এদিকে গতকাল বাজার ঘুরে কোথাও সরকারনির্ধারিত দরে খোলা সয়াবিন বিক্রি হতে দেখা যায়নি। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি) তাদের দৈনন্দিন বাজারদরের প্রতিবেদনে নির্ধারিত দরে খোলা সয়াবিন বিক্রি না হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছে। গতকাল বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১১৯ থেকে ১২৬ টাকা দরে বিক্রি হয়। অথচ খোলা সয়াবিনের সরকার-নির্ধারিত দর হলো ১১৭ টাকা। তবে পাম অয়েল ও বোতলজাত সয়াবিন নির্ধারিত দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। পাম অয়েল প্রতি লিটার ১০৮ থেকে ১১০ টাকা, ১ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা ও ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ৬৩০ থেকে ৬৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়।

প্রায় সারা বছর চিনির দাম স্থিতিশীল থাকলেও রমজান ও শবেবরাত উপলক্ষ্যে পণ্যটির দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে তিন টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা। দাম বেড়েছে আটা ও ময়দার। কেজিতে দুই টাকা বেড়ে প্যাকেট আটা ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা ও খোলা ময়দা ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

দাম বেড়েছে মুরগিরও। স্বল্প আয়ের মানুষ যারা এতদিন গরুর মাংসের বিকল্প হিসেবে ব্র্রয়লার ও কক জাতের মুরগি কিনত তারা বিপাকে পড়েছে। কারণ, সব ধরনের মুরগির দামই বেশ বেড়েছে। গতকাল বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা ও দেশি মুরগির কেজি ৫০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। অথচ দেড় থেকে দুই মাস আগেও প্রতি কেজি দেশি মুরগি সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। টিসিবির হিসেবে গত এক বছরে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে শতাংশ। তবে এক বছরের ব্যবধানে গরুর মাংসের দাম তেমন না বাড়লেও গতকাল বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হতে দেখা যায়। আর খাসির মাংস বিক্রি হয় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি।

তুরাগের নতুন বাজারে বাজার করতে আসা চাকরিজীবী শামসুল আলম বলেন, গরুর মাংসের দাম বেশি হওয়ায় এতদিন ব্রয়লার মুরগিই বেশি কিনতাম। কিন্তু এখন যেভাবে দাম বাড়ছে তাতে ব্রয়লার কেনাও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তবে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে চালের বাজারে। আমদানি বাড়ায় চালের দাম কমতে শুরু করেছে। গতকাল এক সপ্তাহের ব্যবধানে সরু চাল নাজিরশাইল/মিনিকেট কেজিতে এক থেকে দুই টাকা কমে মানভেদে ৫৮ থেকে ৬৪ টাকা ও মোটা চাল এক টাকা কমে ৪৪ থেকে ৪৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের চাল পাইজাম/লতার দাম কমেনি। গতকাল পাইজাম/লতার কেজি বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৫৬ টাকা।

দাম কমেছে পেঁয়াজেরও। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজে পাঁচ টাকা কমে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই দরে বিক্রি হচ্ছে আমদানিকৃত পেঁয়াজও। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, মার্চের মাঝামাঝি থেকে বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। পেঁয়াজের বাজার এখন স্থিতিশীল থাকবে বলে জানান তারা।

আরো সংবাদ